যে কারণে ফেসবুকে ৭দিন নিষিদ্ধ হলেন তসলিমা নাসরিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নভেম্বর ২, ২০২১, ০৬:১৯ পিএম

যে কারণে ফেসবুকে ৭দিন নিষিদ্ধ হলেন তসলিমা নাসরিন

ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি কবি ও লেখক তসলিমা নাসরিনকে আবারও নিষিদ্ধ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এবার তাকে এক সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সোমবার (১ নভেম্বর) টুইটারে দেওয়া এক টুইটে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন । টুইটে তসলিমা বলেন, সত্য বলায় ফেসবুক আমাকে আবারও এক সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশে সনাতন দর্মাবলম্বীদের দুর্গা পূজার সময় কুমিল্লার একটি মন্দিরে  কোরআন শরিফ রাখাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। ওইসময় প্রায় প্রতিদিনই তিনি একাধিক পোস্ট করেন। কখনও তাঁর নিশানায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কখনও আবার বাংলাদেশের সমাজ। লাগাতার বাংলাদেশের ঘটনার নিন্দা করার পর সম্প্রতি ৭ দিনের জন্য লেখিকার অ্যাকাউন্ট ব্যান করল  ফেসবুক।

গতকালই তিনি একথা পোস্ট করে জানিয়েছেন ট্যুইটার হ্যান্ডেলে। লেখিকা লিখেছেন, সত্য বলার জন্য ফেসবুক আমাকে আবারও ৭ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।

তসলিমা আরও লিখেছেন, তিনি সম্প্রতি ফেসবুকে একটি মন্তব্য করেন, '' মুসলমানরা বাংলাদেশী হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দির ধ্বংস করেছে এই বিশ্বাস করে যে, হিন্দুরা হনুমানের উরুর উপর কোরান রেখেছে। কিন্তু যখন জানা গেল ইকবাল হোসেন সেটা করেছেন, হিন্দুরা নয়, তখন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা চুপ হয়ে গিয়েছে, ইকবালের বিরুদ্ধে কিছু বলেনি এবং কিছু করেওনি...'

সম্প্রতি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও সমালোচনা করেন তসলিমা নাসরিন। তিনি লেখেন, “সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে ' লজ্জা' উপন্যাস লিখেছিলাম। ২৮ বছর আগে তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল খালেদা জিয়া সরকার। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা যদি সত্যিই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিরোধী হয়ে থাকেন, তাহলে এখনও তিনি ওই বইয়ের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেন না কেন?”

ফেসবুকেও একইভাবে সোচ্চার ছিলেন তিনি। তারপরই এই পদক্ষেপ করেছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট সংস্থাটি।

চলতি বছরের গত ২২ অক্টোবর, বাংলাদেশে অশান্তির ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাকে চিহ্নিত করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, কক্স বাজার থেকে গতকাল রাতে ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। এই ইকবালই মসজিদ থেকে কোরান নিয়ে এসে কুমিল্লার পুজো মণ্ডপে রেখেছিল। তার ওই কাজের জন্যই ধর্মগ্রন্থ অবমাননার গুজবের জেরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে, চলতি বছরের ১৬ মার্চ ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্মে তসলিমা নাসরিনকে ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ২০১৫ সালে তার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে রেখেছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকের নীতি লঙ্ঘন করায় তার অনেক পোস্ট মুছে ফেলেছে ফেসবুক।

Link copied!