মার্চ ৬, ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম
টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। দেশটি এখন দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এরকম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। মূল্যস্ফীতি চরম পর্যায়ে। ভয়াবহ দুঃসময় কাটাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটি। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে একধরনের ফ্যানের উৎপাদন বন্ধ করেছে। রাতে দোকানপাট বন্ধসহ নানাভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে শাহবাজ শরিফের সরকার। রিজার্ভ–সংকট নিয়েও খাবি খাচ্ছে দেশটি।
এমন পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিও ভোগাচ্ছে দেশটিকে। এ কারণে বিদেশে বসবাসরত প্রায় ৯০ হাজার পাকিস্তানিকে হজের কোটা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অর্থ দাড়াচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ পাকিস্তান থেকে এ বছর হজ যেতে পারবেন না। এই ৯০ হাজার কোটা হিসেবে সুযোগ পাবেন বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা। দেশ থেকে অর্থ বাইরে যাওয়া ঠেকাতে এ উদ্যোগ বলে সরকারের সূত্রগুলো বলছে। এ উদ্যোগের ফলে প্রায় ৪০ কোটি ডলার (৪০০ মিলিয়ন ডলার) দেশের বাইরে যাওয়া বন্ধ করা যাবে বলে মনে করছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানিদের জন্য হজ কোটা কমাতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রবাসী পাকিস্তানিরা এ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেরাই হজ করতে পারবেন বা পাকিস্তানে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তির খরচ বহন করতে পারবেন।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মুফতি আবদুল শাকুর কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে কোটার অর্ধেক বা ৮৯ হাজার ৬০৫ অনাবাসী পাকিস্তানিদের হজের জন্য সুযোগ দেওয়া হবে। এ উদ্যোগের ফলে অনাবাসী পাকিস্তানিরা হয় নিজেরাই কোটা নিতে পারেন বা পাকিস্তান থেকে কাউকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারেন।
বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি এখন অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে (ফেডারেল ক্যাবিনেট) পাঠানো হবে। সেখানেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। বৈঠকের পর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী মিডিয়া ডিরেক্টর উমর বাট বলেন, বৈদেশিক মুদ্রাসংক্রান্ত সমস্যার কারণে পাকিস্তানের হজ কোটার অর্ধেক প্রবাসী পাকিস্তানিদের জন্য বরাদ্দ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে এ বছর ব্যক্তিপ্রতি হজ খরচ ১২ লাখ থেকে ১৩ লাখ রুপি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর পাকিস্তানকে ১ লাখ ৭৯ হাজার ২১০ জনকে হজ কোটা দিয়েছে সৌদি আরব। তবে তীব্র অর্থসংকটের কারণে এত মানুষকে হজের অনুমতি দিতে চায় না শাহবাজ শরিফের সরকার। কারণ, সরকারি হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবার হজের খরচ কমপক্ষে ৭১ শতাংশ বা ৫ লাখ রুপির বেশি বেড়েছে।