জুলাই ৮, ২০২২, ০৬:৫৫ পিএম
শিনজো অ্যাবের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে জাপানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। সভ্য দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মনে করা হয় জাপানকে। এ ধরণের ঘটনা দেশটিতে খুব একটা দেখা যায়না। তবে একেবারে যে ঘটেনি তাও না। ১৯৬০ সালে জাপানের সোশ্যালিস্ট পার্টির নেতা ইনেজিরো আসানুমা একইভাবে রাজনৈতিক সভাচলাকালে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ডানপন্থী একজন উগ্রো জাতীয়তাবাদি তাকে ছুরিকাঘাত করে। দেশটিতে এখনো এমন উগ্রো ডানপন্থীদের অবস্থান রয়েছে। ২০১৯ সালে কিয়োটোর একটি অ্যানিমেশন স্টুডিওতে এক ব্যক্তি আগুন ধরিয়ে দেন। সেই ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হন। ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে বলেন; ওই স্টুডিও তার কাজ চুরি করেছে। ২০০৮ সালে একজন তরুণ টোকিওর আখিহাবারা জেলায় জনাকীর্ণ এলাকার উপর দিয়ে ট্রাক উঠিয়ে দেয়। যে ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়। এ ঘটনা ঘটানোর আগে ওই হামলাকারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। তিনি বলেন, তার কোন বন্ধু নেই, কালো হওয়ায় তাকে সবাই এড়িয়ে চলে। তবে অ্যাবের হত্যাকাণ্ড কেন ঘটেছে সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। নিরাপত্তা নিয়ে জাপানীরা বেশি উদ্বিগ্ন না হওয়ায় খুব একটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেখানে চোখে পড়েনা। এ কারণেই অ্যাবেকে এতোটা কাছ থেকে গুলি করতে পেরেছে হামলাকারী।
এটা ধারণা করা হচ্ছে শিনজো অ্যাবের মতো বড় মাপের একজন নেতার মৃত্যুতে নিশ্চিতভাবেই জাপানে বড় ধরণের পরিবর্তন আসবে। শিনজো অ্যাবের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরণ জানিয়েছেন, জাপান একজন মহান নেতাকে হারালো, যিনি তার গোটা জীবনটাকে রাজনীতির জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনী ব্লিনকেন বলেছেন, শিনজো অ্যাবেকে যেভাবে হত্যা করা হলো তা তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা হয়ে থাকলো। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনী আলবানিজ বলেছেন, শিনজো অস্ট্রেলিয়ার একজন পরম বন্ধু ছিলেন। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
জাপানে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শিনজো আবে শুক্রবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় নারা শহরে একটি রাজনৈতিক সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গোটা জাপানজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।