সালমান রুশদি কথা বলতে পারছেন না, হারাতে পারেন চোখ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগস্ট ১৩, ২০২২, ০৩:৫৮ পিএম

সালমান রুশদি কথা বলতে পারছেন না, হারাতে পারেন চোখ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে এক মঞ্চে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর রচয়িতা ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির অবস্থা ‘ভালো নয়’ নয় বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র (এজেন্ট)।

আরও পড়তে পারেন: সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী কে এই হাদি মাতার?

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান রুশদির গলা ও পাকস্থলীতে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে এবং তিনি চোখ হারাতে পারেন। তার ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করার পরই সালমান রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

লেখকের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু ওয়াইলি এক বিবৃতিতে বলেন, রুশদিকে মঞ্চেই আক্রমণ করা হয়েছে এবং এখন তিনি হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ও কথা বলতে পারছেন না।তার ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ নিউজার্সি থেকে ২৪ বছর বয়সী হাদি মাতার নামে একজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানায়, শিটোকোয়া ইন্সটিটিউশনে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি দৌড়ে মঞ্চে গিয়ে রুশদি এবং তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ওপর হামলা চালায়।

অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলন, "সালমান সম্ভবত চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুর নার্ভ এবং লিভার ছুরির আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”তবে পুলিশ এখনও এই হামলার মোটিভ সম্পর্কে কোন ধারনা দিতে পারেনি। তারা অনুষ্ঠানস্থলে পাওয়া ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও একটি ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুশদীকে গলায় ও পাকস্থলী বরাবর ছুরিকাঘাত করা হয়েছে হামলার পরপরই তাকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়।

অন্যদিকে মঞ্চে রুশদির সাক্ষাৎকার নেওয়া সাংবাদিক হেনরি রিসেকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তিনি মাথায় অল্প আঘাত পেয়েছেন।

হত্যার হুমকি পাওয়া নির্বাসিত লেখকদের জন্য কাজ করা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

নিউইয়র্ক পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, সেখানকার কর্মকর্তা ও দর্শক শ্রোতারা দ্রুত দৌড়ে গিয়ে হামলাকারীকে ধরে ফেলেন ও পরে তাকে আটক করা হয়।

ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী লিন্ডা আব্রামস নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বাধা দেয়ার পরেও হামলাকারী মিস্টার রুশদীকেও আঘাত করার চেষ্টা করছিলেন।

"তিনি আঘাত করেই যাচ্ছিলেন। তাকে সরাতে পাঁচ জন লেগেছে। তিনি ছিলেন ক্ষিপ্ত। খুবই শক্তিশালী ও দ্রুতগামী," বলছিলেন তিনি।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যা শুধু যুক্তরাজ্যে এক মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি করেছিল। কিন্তু ১৯৮৮ সালে রুশদির চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে ৯ বছর বাধ্য হয়ে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল।

বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের ধর্মীয় নেতা প্রয়াত আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন এবং এ জন্য ত্রিশ লাখ ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করে একটি ফতোয়া দেন।

রুশদির  মাথার মূল্য ঘোষণা করে দেয়া এই ফতোয়া এখনো বহাল আছে। যদিও ইরান সরকার খোমেনির এই ফতোয়া থেকে দূরত্বই বজায় রাখছিলো। তবে ইরানের ধর্মীয় ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা ২০১২ সালে পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫ লাখ ডলার বাড়িয়ে দেন।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সালমান রুশদী একজন ব্রিটিশ আমেরিকান নাগরিক। মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেও পরে তিনি কোন ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন না।

Link copied!