তুরষ্কের ঐতিহাসিক হায়া সোফিয়া মসজিদে দীর্ঘ ৮৮ বছর পর প্রথমবারের মতো তারাবির নামাজ আদায় হয়েছে। তুরষ্কের গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গত শুক্রবার (১ এপ্রিল) রমজান উপলক্ষে মসজিদটিতে তারাবির নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। ঐতিহাসিক হায়া সোফিয়া মসজিদে সবশেষ তারাবি হয় ১৯৩৪ সালে।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস জুড়ে মসজিদে (আগে এটি গীর্জা ছিল) নানা আয়োজন থাকবে। তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ২০২০ সালের ২৪ জুলাই এই গীর্জাটিকে পুনরায় মসজিদ হিসেবে চালু করে। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি-নিষেধের কারণে ২০২১ সালে এখানে তারাবির নামাজ আদায় হয়নি। বর্তমানে তুরস্কে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় এবং দেশটির অধিকাংশ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ায় মসজিদটিতে তারাবির নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হায়া সোফিয়া ৫৩২ সালে নির্মিত হয়েছিল। তুর্কি সুলতান মাহমুদ ফাতাহ ১৪৪৩ সালে ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর এটিকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করে। তার আগে এটি প্রায় ৯১৬ বছর গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এ ছাড়া ৮৬ বছর যাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে ১৪৫৩ সাল থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর এটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। তুরস্কের পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে অন্যতম এই হায়া সোফিয়া মসজিদ। যেটি দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আসেন। দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি খোলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানোর ডিক্রি বাতিল করে মসজিদে ফিরিয়ে আনার পক্ষে রায় দেয়। একই বছরের ২৪ জুলাই থেকে হায়া সোফিয়ায় জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গীর্জাটি মসজিদে রূপান্তর হলেও হায়া সোফিয়াতে থাকা খ্রিস্টীয় কারুকার্য ও প্রাচীর চিত্রগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। নামাজের সময় ওইগুলো ঢেকে রাখা হয়।