বিশেষ ফ্লাইটে সৌদি আরবের বাধা, যাত্রীবিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১৭, ২০২১, ০৬:২৬ পিএম

বিশেষ ফ্লাইটে সৌদি আরবের বাধা, যাত্রীবিক্ষোভ

বিশেষ ফ্লাইট নামার অনুমতি দেয়নি সৌদি! বিমানবন্দরে ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর রিয়াদগামী যাত্রীদের বিক্ষোভ চলছে। বিশেষ ফ্লাইটের আয়োজনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলেছে, সৌদি সরকারের অনুমতি না মেলায় ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। এদিকে শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২ টা থেকে কারওয়ান বাজার সড়ক অবরোধ করে সৌদিগামী শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।

Saudia

বিশেষ ফ্লাইট কেন?

১৪ এপ্রিল থেকে দেশে লকডাউনে এক সপ্তাহের জন্য সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। অবশেষে এই প্রবাসীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার জন্য শনিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ সরকার। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে ৫টি দেশে বিশেষ ফ্লাইট চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরা নিশ্চিত করতে আজ (১৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে এসব ফ্লাইট শুরু হয়েছিল। পাঁচটি দেশ হলো, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। এসব দেশ থেকে ফেরা প্রবাসীদের বাধ্যতামূলক দুই সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিইনে থাকতে হবে। পাঁচ দেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ১২টি এয়ারলাইন্সকে অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এয়ারলাইন্সগুলো হলো, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি, ফ্লাই দুবাই।

প্রবাসীদের বিক্ষোভের কারণ

১৭ এপ্রিল থেকে বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হলে ঘোষিত ৬ ঘন্টা আগে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির হন সৌদি প্রবাসীরা। কিন্তু দীর্ঘ ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর তারা জানতে পারেন সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে বিশেষ এই ফ্লাইট পরিচালনা করার এবং রিয়াদ এয়ারপোর্টে অবতরণের অনুমতি দেয়নি। এর ফলে তারা বিমানবন্ধর ও কারওয়ানবাজারে বিক্ষোভ করেন। দুপুর ১২ টা নাগাদ কারওয়ান বাজারের সড়ক অবরোধ করে তারা। তাদের দাবি, আকামা বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পথে এখন যদি তারা সৌদি না যেতে পারে তাহলে তারা কাজের চুক্তি হারিয়ে ফেলবে। এর ফলে নতুন করে বিপাকে পড়তে হবে। ভোরে বিমানবন্দরে বিক্ষোভ কররার পাশাপাশি দুপুর ১২ টায় কারওয়ান বাজারের সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।

Saud

কী বলছে কর্তৃপক্ষ 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশে আচমকা কোভিড-১৯ বিস্ফোরণ এবং চলমান লকডাউন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল সব কিছু মিলিয়ে বেশ সঙ্গত কারণেই সৌদি সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, নিয়মিত যে ফ্লাইট শিডিউল ছিল, আমরা  বিশেষ বিবেচনায় এটা চলাচলের অনুমতি দিচ্ছি। ১৭ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ফ্লাইট শুরু হবে। তবে সৌদি আরবের সিদ্ধান্তে আমরা হাত দিতে পারি না। এর আগে প্রবাসীদের বিষয়টি মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়রম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় প্রথমিকভাবে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই ৫টি দেশে ১০০ থেকে ১২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

Meeting

যে কারনে বাতিল হল ৭ টি ফ্লাইট

শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিশেষ ফ্লাইট চালুর প্রথম দিনে মোট ১৪টি ফ্লাইট আসা ও যাওয়ার কথা ছিল। এরমধ্যে ১০টি যাওয়া ফ্লাইটের মধ্যে ৫টি বাতিল করা হয়। আর আসার ৪টি ফ্লাইটের মধ্যে ২টি বাতিল করা হয়। আসা-যাওয়া মিলিয়ে মোট ৭টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

ল্যান্ডিং পারমিশন পেতে বিলম্ব ও যাত্রী স্বল্পতায় ফ্লাইটগুলো বাতিল করা হয়েছে বলে জানান শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান।

তিনি বলেন, আশা করি রবিবারের (১৮ এপ্রিল) মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে। ফ্লাইটও বাড়বে। যাত্রী ভোগান্তির বিষয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশন অবগত আছে। দেশটির এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে কতৃর্পক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।

Link copied!