রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা তুললেও আলু রপ্তানি হচ্ছে না

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৮, ২০২২, ০৪:৪৫ পিএম

রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা তুললেও আলু রপ্তানি হচ্ছে না

বিশ্বে বাজছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা। গত রবিবার বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে রাশিয়া। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংকে চিঠি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছে রাশিয়ান ফাইটোস্যানিটারি (রোসেল খোদনাজর)। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আলু ব্যবসায়ীরা এই সংবাদে খুশি হয়েও হাসতে পারলেন না। বাংলাদেশ যে দেশগুলোতে আলু রপ্তানি করে থাকে তার মধ্যে মালয়েশিয়াই প্রথম তবে বাংলাদেশ যদি রাশিয়ার বাজার ধরতে পারে তাহলে ব্যবসায়ীরা প্রচুর আলু রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে।

রাশিয়ায় ৭ বছর ধরে রপ্তানি হয়নি আলু

রাশিয়া ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর পেছনে আলুতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, মথের উপস্থিতি, এবং ল্যাব টেস্ট সুবিধা না থাকা এবং আন্তর্জাতিক মান রক্ষা না করার কারণ দেখানো হয়। তবে রবিবার বিষয়গুলো সংশোধন সাপেক্ষে পরবর্তীতে আলুর রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা জানায় দেশটি৷ রাশিয়া এমন সময় নিষেধাজ্ঞা তুলে দিল যখন তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন পেতে রাশিয়া এমন পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারে।

তবে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও আলু রপ্তানি করতে পারা যায়নি বলে জানায় বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী বেগম। তিনি বলেন, রাশিয়াতে কয়েকবার আলু রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সফল হয় নি। একবার রাশিয়ায় আলু যাবে বলে সব চূড়ান্ত হলেও তা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু এখন যুদ্ধের সময় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য কারনে চলমান লেনদেনই ব্যাহত আছে। যার ফলে নিষেধাজ্ঞা তুললেও সহসা রপ্তানি করা যাবে না আলু। 

মালয়শিয়া রপ্তানির বড় বাজার

কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস)  তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালে এ্যাগ্রোবেজ্ড টেকনোলজি ডেভেলপমেন্টের প্রোগ্রামের (এটিডিপি) একটি মার্কেটিং মিশন বাংলাদেশ থেকে সিংঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ফ্রেশ আলু রপ্তানির সম্ভাব্যতা যাচাই করে এবং ১৯৯৯ সালে এটিডিপির উদ্যোগে প্রথম ১২৬ টন আলু উল্লিখিত দেশে রপ্তানি করা হয়। এরপর ২০০৫ ও ২০০৬ সালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আলু রপ্তানি করা হয়। ২০০৭ সালে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার টনে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭টি প্রাইভেট কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার টন আলু রপ্তানি করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াও বাংলাদেশ থেকে আলু আমদানি শুরু করেছে। শুধুমাত্র মালয়েশিয়ায় আলুর চাহিদা রয়েছে ১০ লাখ টন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকায় প্রতিটিতে চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ টন করে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি)হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ২০১৪-১৫ সালে ২৭২ কোটি টাকার আলু বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে যার মধ্যে শুধু মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হয়েছে ১০৪ কোটি টাকার আলু এবং রাশিয়ায় ৭২ কোটি টাকার আলু।


আরও পড়ুন:

রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার নিহত: ইউক্রেন

Link copied!