একটি দ্বীপ, একটি জনগোষ্ঠী। আর হাজার জমজদের ভীড়। তারা দেখতে একইরকম, পোশাক একইরকম, চলাফেরায়ও নেই তেমন ভিন্নতা। এই জনগোষ্ঠীর বসবাস ফিলিপাইনের ছোট্ট একটি দ্বীপে। দ্বীপটির নাম `আলাবাত`।
পুরো বিশ্বের কাছে এদের রহস্যময় হয়ে ওঠার কারণ অত্যধিক পরিমাণে যমজ শিশুর জন্ম হওয়া। আমাদের সমাজে যমজ শিশু জন্ম হওয়ার ঘটনা খুবই সীমিত হলেও এই জনগোষ্ঠীতে যমজ শিশু জন্ম নেয়াই স্বাভাবিক বিষয়।
আলাবাত নামক এই প্রত্যন্ত দ্বীপটির প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে যমজ সন্তান। এই দ্বীপটি দেখলে আপনার মাথায় কেবল একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাবে। তা হলো, কেন এই দ্বীপে এত যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে? এই দ্বীপে পা রাখলে সর্বত্রই যমজদের দেখতে পাবেন। তা হতে পারে ২ বছর বয়সের যমজ শিশু কিংবা ৮৯ বছর বয়সের বৃদ্ধ যমজ দুই বোন।
এই দ্বীপের সবচেয়ে বয়স্ক যমজ দুই বোন হলো ৮৯ বছরের থিয়োডেসিয়া মিরাস এবং এন্তোনিনা এমারগো। শুধু স্থানীয়রাই নয় তারা নিজেরাও দাবি করেন ওই এলাকার সবথেকে বয়স্ক যমজ তারা। তাদের মতে, তাদের থেকে বয়সে বড় মানুষ হয়তো বা রয়েছে তবে যমজ হিসেবে তারাই ঐ দ্বীপে সবথেকে বৃদ্ধ।
এই দ্বীপে প্রতি ৩টি পরিবারের মধ্যে একটিতে যমজ সন্তান রয়েছে। দ্বীপটিতে বসবাসরত মানুষের সংখ্যাও খুব বেশি নয়। মাত্র ১৬০০০ মানুষের বসবাস দ্বীপটিতে। তার মধ্যে প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে রয়েছে যমজ সন্তান। তাই এই দ্বীপটিতে ঢুকলে চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো অবস্থা হয় সকল পর্যটকদের।
এর উপর পর্যটকদের বিভ্রান্তি বাড়াতে যেন সদা প্রস্তুত দ্বীপে বসবাসরত যমজরা। পর্যটকদের বিভ্রান্তি আরও কয়েকগুণ বাড়াতে দ্বীপে বসবাসরত বেশিরভাগ যমজরাই একইধরনের পোশাক পরে থাকে। এমনকি তাদের চুলের স্টাইলও থাকে একইরকম। তাই তাদের আলাদা আলাদা ভাবে চিনতে পারা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়ে।
কেউ এর আসল রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি। কেউ এর আসল রহস্য না জানলেও, কিছু প্রচলিত মত-বিশ্বাস তো রয়েছেই। যেমন, কেউ কেউ বলে এটি এই জনগোষ্ঠীর মানুষদের জিনগত কারণে হয়ে থাকে। কেউ কেউ তো আবার কারণ হিসেবে সে দ্বীপের পানিকেই দায়ী করেন। আবার কেউ কেউ তো মনে করেন, যমজ কলা খাওয়ার কারণে এত যমজ সন্তান জন্ম দেন আলাবাত দ্বীপের মানুষ।
তবে কারণ যাই হোক অনেকগুলো অভিন্ন দেখতে লোকের কারণে দ্বীপটির রহস্যময়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়াও এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও নেহাত কম নয়। ছোট্ট এই দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বেশ মনোমুগ্ধকর।
সব মিলিয়ে দ্বীপটি পর্যটকদের নজরে পড়ার মতো। তবে যত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই থাক না কেন এই দ্বীপ ভ্রমণকালে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে দ্বীপের যমজ মানুষেরা। বেশিরভাগ পর্যটকরা এই দ্বীপ ভ্রমণ করেন কেবলমাত্র একসঙ্গে এতগুলো যমজদের দেখার জন্য৷