গোয়ের্নিকা, উত্তর স্পেনের শহরতলি। তখন স্পেনের গৃহযুদ্ধ চলছে। জার্মান বাহিনী বোমা ফেলল ছোট্ট শহরটির ওপর। চার দিকে ধ্বংসের ছবি। আর ধ্বংসের সেই ভয়াবহ চেহারা নিয়ে নিজের স্টুডিয়োয় ছবি আঁকা শুরু করলেন এক জন শিল্পী। শোনা যায়, ছবির কাজ চলার সময় আচমকাই স্টুডিয়োতে হানা দেয় জার্মানরা। ছবি দেখিয়ে তারা প্রশ্ন করে, ‘কে করেছে এই কাজ?’ উত্তরও ছিটকে আসে, ‘তোমরা।’ মানে হল, শহরটির এই দশা করেছ তোমরা। যুদ্ধিবিরোধী এই ছবিটি পরে বিশ্বখ্যাতি পায়। এর চিত্রকর পাবলো পিকাসো।
বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী চিত্রশিল্পীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি নাম নিঃসন্দেহে পাবলো পিকাসো। কেবল ক্যানভাসই তার মাধ্যম ছিল না, বিংশ শতাব্দীর এই চিত্রসম্রাট একাধারে দক্ষ একজন ভাস্কর, মৃৎশিল্পী, পোশাক ও প্রসিদ্ধ একজন মঞ্চসজ্জাশিল্পী ছিলেন। বিভিন্ন মাধ্যমে কুড়ি হাজারেরও বেশি শিল্পকর্ম রয়েছে তার। এমনকি কবিতা ও নাটক পর্যন্ত রচনা করেছিলেন তিনি। চিত্রশিল্পের সংজ্ঞাই যেন প্রায় বদলে গেল তার হাত ধরে। কিউবিস্ট আন্দোলনের এক অন্যতম মুখ ছিলেন পিকাসো। কোলাজ শিল্পটির উদ্ভাবনেও তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি চিত্রশিল্পকে এমন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন, এমন নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল তার ছবির যে বিশ্বব্যাপী বহু চিত্রশিল্পী পিকাসোর প্রভাব এড়াতে পারেননি। অসামান্য বৈপ্লবিক শিল্পকীর্তির জন্য পাবলো পিকাসো চিত্রশিল্পের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
১৮৮১ সালের ২৫ অক্টোবর পিকাসোর জন্ম হয় দক্ষিণ স্পেনের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী বন্দর-শহর মালাগায়। পিকাসোর প্রকৃত নাম পাবলো রুইজ ই পিকাসো (Pablo Ruiz Y Picasso)। স্পেনীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী নামের মধ্যে তার বাবা এবং মায়ের নামটিও জড়িয়ে আছে৷ তার বাবার নাম দন জোসে রুইজ ই ব্লাসকো এবং মায়ের নাম মারিয়া পিকাসো ই লোপেজ। মায়ের নামাংশটুকু অর্থাৎ পিকাসো নামেই বিশ্বজোড়া পরিচিতি তার। ক্যাথলিক ধর্মে দীক্ষিত হলেও ভবিষ্যতে পিকাসো ঘোরতর নাস্তিকে পরিণত হয়েছিলেন। পিকাসোদের পরিবার ছিল মধ্যবিত্ত পরিবার৷ তার বাবা রুইজ নিজে একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন এবং প্রকৃতিকেন্দ্রিক ছবি বিশেষত পাখির ছবি আঁকাই তার বিশেষত্ব ছিল। তিনি চারুকলা বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং যাদুঘরের তত্বাবধায়ক ছিলেন। সুতরাং এই রঙ তুলির পরিবেশে বেড়ে ওঠায় খুব ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ গড়ে ওঠে পিকাসোর। তার মায়ের কথা থেকে জানা যায়, পিকাসো শৈশবে প্রথম যে কথাটি বলেছিল তা হল ‘পিজ’, যেটি আসলে স্পেনীয় ‘ল্যাপিজ’ (lápiz) শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ, যার অর্থ হল ‘পেন্সিল’। মাত্র সাত বছর বয়সেই পিকাসো বাবার কাছ থেকে প্রাণীশরীর অঙ্কন এবং তৈলচিত্রের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন। মাত্র ন বছর বয়সে পিকাসো একটি সম্পূর্ণ তৈলচিত্র অঙ্কন করেছিলেন। বাবা তার পিকাসোর এই অসামান্য প্রতিভাকে চিনেছিলেন এবং যত্নসহকারে লালন করেছিলেন।
১৮৯১ সালে পিকাসোরা চলে গিয়েছিলেন কোরুনায়। সেখানে পিকাসোর বাবা চারুকলা বিদ্যায়ের অধ্যাপক হয়েছিলেন। পিকাসোর বয়স তখন দশ। সেখানে চারবছর অবস্থান করেছিলেন তারা। সেখানে থাকাকালীনই একদিন বাবা রুইজ লক্ষ্য করেছিলেন তার অসমাপ্ত একটি পায়রার ছবি নিপুণ হাতে সমাপ্ত করছে ১৩ বছরের বালক পিকাসো। বাবা তখন অনুভব করেছিলেন যে, তার সন্তান চিত্রকর্মে তাকেও অতিক্রম করে গেছে।
১৮৯৫ সালে সাত বছর বয়সী বোন কঞ্চিতার হঠাৎ ডিপথেরিয়ায় মৃত্যু হলে পিকাসো গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছিলেন। সেই বছরেই তাদের গোটা পরিবার চলে এসেছিল বার্সেলোনায় যদিও পিকাসোর বাবা আগেই চলে এসেছিলেন এখানে এবং এখানকার লা লোতজা আর্ট স্কুলে অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানেই পিকাসোর শিল্পশিক্ষা চলতে থাকে। সেখানে উচ্চশ্রেণীতে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষায় খুব সহজেই কৃতকার্য হয়েছিলেন পিকাসো। এই বিরাট শহর বার্সেলোনায় ছবি আঁকার ক্ষেত্রে বেশ সুবিধা হল পিকাসোর। যদিও এই লা লোতজা আর্ট স্কুলে বেশিদিন থাকেননি তিনি। ১৮৯৭ সালের এক শরৎকালে তিনি মাদ্রিদের বিখ্যাত রয়্যাল আ্যকাডেমি অব সান ফার্নান্দোতে ভর্তি হন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তিনি কাটাতেন শ্রেণীকক্ষের চার দেওয়ালের বাইরে৷ শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াতেন। কখনো ক্যাফেতে, কখনও প্রাদো (Prado) শিল্প যাদুঘরে সময় কাটাতেন পিকাসো। সেখানে বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর ছবি দেখতেন এবং সমৃদ্ধ হতেন। এল গ্রেকোর (El Greco) ছবি তিনি পছন্দ করতেন ভীষণ এবং এই শিল্পীর ছবির মাধ্যমে পিকাসো যে প্রভাবি হয়েছিলেন তা তার পরবর্তী চিত্র শিল্পে লক্ষ্য করা যায়।
পিকাসো সারাজীবনে বহুনারীসঙ্গ করেছেন। তার ছবিতেও সে প্রভাব পড়েছে। ১৯১৮ সালের ১২ জুলাই তার বিয়ে হয়েছিল নৃত্যশিল্পী ওলগা খোখলোভার সঙ্গে। যদিও ১৯০৫ সালে ফরাসী শিল্পী ও মডেল ফার্নান্দে অলিভিয়ের পিকাসোর জীবনে প্রেমের উন্মাদনা এনে দিয়েছিলেন। অলিভিয়েরের ৬০টিরও বেশি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন পিকাসো। ১৯১২ সালে অলিভওয়ের তাকে ছেড়ে গেলে পিকাসোর জীবনে এসেছিলেন ইভা গুয়েল। তাকে কেন্দ্র করে ‘আই লাভ ইভা’ নামে কিছু ছবি এঁকেছিলেন। ওলগা খোখলোভার সঙ্গে বিবাহজীবন সুখের হয়নি পিকাসোর। তার সঙ্গে একপ্রকার বিবাহবিচ্ছেদই হয়ে গিয়েছিল যদিও আইনগতভাবে তা সম্পূর্ণ হয়নি। এইসময় অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ম্যারি-থেরেস ওয়াল্টার (Marie-Thérèse Walter), যুগোস্লাভিয়ান চিত্রগ্রাহক এবং চিত্রশিল্পী ডোরা মার, জেনভিয়েভ লাপোর্তে প্রমুখ নারীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে জীবন কাটিয়েছেন পিকাসো। তাদের প্রত্যেককে নিয়েই উল্লেখযোগ্য এবং বিখ্যাত কিছু ছবিও এঁকেছেন। এক মৃৎশিল্প প্রদর্শনীতে জ্যাকুলিন রোকের (Jacqueline Roque) সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তার। শেষপর্যন্ত তাকেই বিয়ে করেছিলেন পিকাসো।
খুব অল্প বয়সেই এমন কিছু ছবি এঁকেছিলেন পিকাসো যা তাঁর সময়ে এবং পরবর্তীকালেও বহু প্রশংসা লাভ করেছিল। বলা যেতে পারে ১৮৯৪ সাল থেকেই একজন যথার্থ চিত্রশিল্পী হিসেবে তার জীবন শুরু হয়েছিল। ১৮৯৬ সালে তিনি আঁকলেন তাঁর বিখ্যাত ছবি ‘দ্য ফার্স্ট কমিউনিয়ন’। এই ছবির মধ্যে পিকাসো তার বোন লোলাকে চিত্রায়িত করলেন। সেই বছরেই আঁকা তার আরেকটি বিখ্যাত ছবি ‘পোট্রের্ট অব আন্ট পেপা’। এই ছবি নিঃসন্দেহে স্প্যানিশ চিত্রকলার ইতিহাসে অন্যতম সেরা একটি সৃষ্টি। ১৮৯৭ সালে তার আঁকা ‘সায়েন্স অ্যান্ড চ্যারিটি’ (Science and Charity) ছবিটি মাদ্রিদের শিল্প প্রদর্শনীতে সম্মানিত হয়েছিল। ১৮৯৭ সালে তার ছবির বাস্তবতা প্রতীকবাদী চিন্তাদ্বারা প্রভাবিত হতে দেখা যায়। অনেকে ১৮৯৯ থেকে ১৯০০ এই সময়কালকে পিকাসোর ছবির আধুনিক পর্ব বলে চিহ্নিত করে থাকেন।
ফরাসী রীতি তখন শিল্প ও সাহিত্যসাধকদের অন্যতম পছন্দের জিনিস। ১৯০০ সালে পিকাসো চলে গিয়েছিলেন প্যারিসে। সেখানে তার প্রথম বন্ধু ছিলেন কবি ও সাংবাদিক ম্যাক্স জেকব (Max Jacob)। সেই বন্ধুই পিকাসোকে ভাষাশিক্ষা ও সাহিত্যের জগতের সঙ্গে পরিচয়লাভের ক্ষেত্রে সহায়তা করেছিল। ১৯০১ সালের প্রথম পাঁচ মাস পিকাসো মাদ্রিদে বসবাস করেন এবং এসময় তার বন্ধু ফ্রান্সিসকো দে আসিস সোলের (Francisco de Asís Soler) -এর সঙ্গে ‘আর্টে জোভেন’ (Arte Joven) নামে একটি পত্রিকা চালু করেন। সেই পত্রিকায় দারিদ্র্যকে অবলম্বন করে বেশকিছু নির্মম কার্টুন এঁকেছিলেন পিকাসো। ১৯০১ সালের ৩১ মার্চ এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল৷ বাস্তবিকই এইসময় পিকাসো নিজেও ভীষণ কষ্টে দিনযাপন করেছেন। খাদ্য এবং ছবি আঁকার উপকরণ কেনার অর্থও ছিল না তার। নানা ঘটনার অভিঘাত এসময় আলোড়িত করেছে তাকে।
১৯০১ থেকে ১৯০৪ সালে আঁকা ছবিগুলিকে পিকাসোর ‘ব্লু পিরিয়ড’-এর ছবি বলা হয়ে থাকে। এই সময়পর্বেই তার প্রিয় বন্ধু কার্লস ক্যাসাজেমাস প্রেমে প্রতারিত হয়ে আত্মহত্যা করলে তা পিকাসোর হৃদয়ে প্রচন্ড আলোড়ন জাগিয়েছিল। ১৯০১ সাল থেকে শুরু করে ক্যাসাজেমসের বিভিন্ন রুপকধর্মী প্রতিকৃতি আঁকেন পিকাসো। ১৯০৩ সালে আঁকা ‘লা ভিয়ে’ (La Vie) তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তার এইসময়ের ছবিতে ধরা দিয়েছে মানুষের দুঃখ, ক্লেশ, যন্ত্রণার ছবি। এই পর্বে অন্ধ মানুষ, ভুতূড়ে মায়ের ছবি, অপুষ্ট, শীর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিভিন্ন মানুষকে তিনি চিত্রিত করেছেন ক্যানভাসে। সেইসব ছবিতে প্রধান রঙ হিসেবে ব্যবহার করতেন অস্পষ্ট নীলরঙ। সেইকারনে এই পর্বকে ‘ব্লু পিরিয়ড’ বলা হয়ে থাকে। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ছবি হল, ‘দ্য ফ্রুগাল রিপাস্ট’, ‘দ্য ব্লাইন্ডম্যান’স মিল’ ইত্যাদি।
১৯০৪ থেকে ১৯০৬, এই সময়কালকে বলা হয় পিকাসোর ছবির ‘রোজ পিরিয়ড’ অর্থাৎ গোলাপ বা গোলাপি পর্ব। এইসময় তার জীবনে প্রেমের ঢেউ এসে লাগে ফলে জীবন থেকে আগের বিষন্নতা কেটে যায়। এইসময় তাঁর ছবিতে উজ্জ্বল রঙ এবং বিশেষত গোলাপি রঙের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় সবথেকে বেশি। এইসময় প্রায় আটশো ফ্রাঙ্ক দামেও তার ছবি বিক্রি হয় ফলে পূর্ববর্তী অভাব অনটনও দূর হয়। এসময়ের ছবিতে রেখায় রঙে কোমলতা লক্ষ্য করা যায়। সার্কাসে ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও এই সময়ের ছবিতে স্পষ্ট। এই সময়পর্বের কয়েকটি ছবি হল, ‘গার্ল ব্যালেন্সিং অন এ বল’, ‘দ্য অ্যাক্টর’ ইত্যাদি।
১৯০৭ থেকে ১৯০৯ সময়পর্বের ছবিগুলিতে আফ্রিকান শিল্পরীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এইসময়ের একটি জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত কাজ হল ‘লেস দামোইসেলিস ডি’আভিগনন’।
এরপর ১৯০৭ থেকে ১৯১২ সাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন এসময়তেই শিল্পী জর্জেস ব্রাকের সঙ্গে কাজ করে যৌথভাবে তাঁরা শিল্পে কিউবিস্ট আন্দোলনের সূচনা করলেন যা কিনা সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছিল। জটিল জ্যামিতিক পদ্ধতিতে বস্তুর বিনির্মাণ করাই ছিল এর বিশেষত্ব। একটানা প্রায় ১৯১৯ সাল পর্যন্ত এই কিউবিজমের চর্চা চালিয়ে গেছেন তিনি। এই রীতির কয়েকটি ছবি হল, ‘হেড অব এ ওমেন, ফার্নান্দে , ‘গার্ল উইথ এ ম্যান্ডোলিন’ ইত্যাদি। এই সময়পর্বেই জর্জেস ব্রাকের সঙ্গেই কোলাজ পদ্ধতির প্রচলন করেছিলেন পিকাসো।
পরবর্তীকালে তার ছবিতে পরাবাস্তববাদের ছোঁয়া দেখা যায় প্রায় ১৯২৯ সাল পর্যন্ত। ‘পেজেন্টস স্লিপিং’ , ‘থ্রি ড্যান্সারস’ এই গোত্রের ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ১৯৩০ এর দশকের তার সবথেকে জনপ্রিয় এবং বিশ্ববিখ্যাত একটি ছবি হল ‘গুয়ের্নিকা’, যেটি আঁকা হয়েছিল ১৯৩৭ সালে। স্পেনের গৃহযুদ্ধ ছিল এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। তাঁর আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি হল, ‘দ্য ওল্ড গিটারিস্ট’, ‘গার্ল বিফোর এ মিরর’ , ‘দ্য উইপিং ওম্যান’ ইত্যাদি।
১৯৪৪ এর পর থেকে পিকাসো ভাস্কর্যের দিকে মনোনিবেশ করেন। ১৯৪৯ সালে ফিলাডেলফিয়া মিউসিয়াম অব আর্টের প্রদর্শনীতে নিজের ভাস্কর্য সমেত অংশ নেন পিকাসো। সেখানে ২৫০ জন ভাস্করের মধ্যে পিকাসো ছিলেন একজন। তার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যটির নাম ‘শিকাগো পিকাসো’। এছাড়াও মৃৎশিল্পের কাজ, পোশাক পরিকল্পনা ও মঞ্চসজ্জার কাজও করেছিলেন পাবলো পিকাসো।
শুধু শিল্পকলাতেই নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি তিনি, পাশাপাশি বহু কবিতা এবং নাটক রচনাও করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে অর্থাৎ ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত পিকাসো একটানা কবিতা চর্চা চালিয়ে গেছেন। এই সময়কালের মধ্যে ৩০০টিরও বেশি কবিতা রচনা করেছিলেন তিনি। এছাড়াও দুটি নাটকও লিখেছেন পিকাসো। তার লেখা নাটকদুটির নাম, ‘ডিজায়ার কট বাই দ্য টেইল’ এবং ‘দ্য ফোর লিটল গার্লস’।
১৯৭৩ সালের ৮ এপ্রিল ফ্রান্সের মৌগিন্সে ফুসফুসের রোগ পালমোনারি এডেমা এবং হৃদক্রিয়ার অবনতির কারণে বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসোর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।