বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ নামে নতুন একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা আসার পর এবার জানা গেলে, এক দশক আগেই তাকে নিয়ে একটি সিনেমা তৈরি করেছিলেন কিংবদন্তী গীতিকার, প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ২০১৩ সালে ‘আপসহীন’ নামে খালেদা জিয়ার বায়োপিক নির্মাণ করেছিলেন তিনি। আর এতে কেন্দ্রীয় অর্থাৎ খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঢাকাই চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।
ব্যক্তিজীবনে আওয়ামী লীগ সমর্থক নিপুণ আক্তার সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়ার নেপথের ঘটনা জানিয়ে বলেন, একদিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আমার বাসায় আসেন। সিনেমাটির কথা জানালেন। তখন শাহ আলম কিরণ ভাইয়ের ‘একাত্তরের মা জননী’ ছবির শুটিং চলছে। আমাকে আঙ্কেল বললেন, সিনেমাটি ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে। আমাকে তার চরিত্রেই রূপদান করতে হবে। জানতে চাইলেন, আমার আপত্তি আছে কিনা? জানালাম, অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডামের চরিত্রে অবশ্যই অভিনয় করা উচিত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকাই অভিনেত্রী নিপুণ বলেন, “আমি রাজি হওয়ায় আঙ্কেল খুব খুশি হলেন। জানালেন, আমার আগে জয়া আহসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশার কথা উঠেছিল। তবে গাজী আঙ্কেলই হেলাল ভাইকে বলেছিলেন, নিপুণ হলে ম্যাডামের চেহারার সঙ্গে দারুণ মিলবে।”
আরও পড়ুন: শিল্পী সমিতির নির্বাচন: নিপুণকে জেতাতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম
সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। তখন দ্রুতগতিতে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষ করে সেন্সরে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন হেলাল খান। তবে এর আগেই বিএনপির এই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেই সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু জাসাস নেতা হেলাল খান কারাগারে অন্তরীণ থাকায় ‘আপসহীন’ সিনেমাটি মুক্তির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হননি গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
এর মধ্যেই ২০২২ সালে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যু হয়। সিনেমাটি নিয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে শীঘ্রই মুক্তি দিতে চান সিনেমায় জিয়াউর রহমানের চরিত্রে অভিনয়কারী হেলাল খান। তবে তার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে একবার দেখা করতে চান তিনি। গণমধ্যমে তিনি বলেন, “ম্যাডাম অসুস্থ। এই মুহূর্তে এটা নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না। তিনি সুস্থ হলেই ছবিটি নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করবো। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।”
এই অভিনেতা আরও বলেন, “মাঝখানে ১১ বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে। তাই ছবিটিতে বেশ কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হবে। আশা করছি, এই বছরই দর্শকদের ছবিটি দেখাতে পারবো।”
ঢাকাই নায়িকা নিপুণ জানান, শুটিংয়ের আগে খালেদা জিয়াকে নিয়ে অনেক পড়াশোনাও করেছেন তিনি। এ বিষয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ারই তাকে সহযোগিতা করেছেন।
প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সন্তান সরফরাজ আনোয়ার উপলও চান সিনেমাটি দ্রুত মুক্তি পাক। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমরা পারিবারিকভাবেও উদ্যোগ নিয়েছি বাবার সব সৃষ্টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। হেলাল আঙ্কেল এখন দেশে আছেন। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করবো। এটাই আমার বাবার নির্মিত শেষ সিনেমা। দর্শক দেখলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে। এটা শুধু যে একটা চলচ্চিত্র তা কিন্তু নয়, একই সঙ্গে সফল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার জীবনীও। দেখলে দর্শক জানতে পারবে দেশের প্রতি তাদের ভালোবাসা, ত্যাগ ও মহিমার কথা।”