মার্চ ৩১, ২০২২, ০৫:৩৭ পিএম
গত ২৯ মার্চ ঢাকা মাতিয়ে গেলেন মাদ্রাজ মায়েস্ত্রো এ আর রাহমান। ভুবন বিখ্যাত এই মিউজিক মাস্টারের আগে একই মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেছে ব্যান্ড মাইলস, গায়িকা-সাংসদ মমতাজ। বিসিবি’র উদ্যোগে পুরো আয়োজনটি হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে।
‘ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব হান্ড্রেড’ নামের এমন আয়োজনে গৌরবান্বিত হয়েছেন অনেকে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে উঠেছে সমালোচনাও। বৃষ্টিতে বিঘ্ন, ছাউনি না থাকা, প্রচারে গোলযোগসহ অনেক অভিযোগ ছিল দর্শকদের পক্ষ থেকে। তবে এসব ছাপিয়ে গেল দুদিনে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সমালোচনার ঝড় বইছে কনসার্টের টিকিটে ও পোস্টারে মাইলস এবং মমতাজ বেগমের নাম-ছবি স্থান পায়নি বলে। সমালোচকদের ভাষ্য, বিদেশী এ আর রাহমানকে সম্মান দেখাতে গিয়ে পরোক্ষভাবে অসম্মানিত করা হয়েছে দেশের শিল্পীদের!
দু’দিনের মাথায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন মাইলস প্রধান হামিন আহমেদ।
সমালোচকদের উদ্দেশ্যে এই ব্যান্ড তারকা তার সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘এ আর রাহমান- একজন বিশ্বখ্যাত, প্রশংসিত, অত্যন্ত দক্ষ ও সম্মানিত শিল্পী। যার আছে দুই-দুটি গ্র্যামি পুরস্কার এবং দুর্দান্ত অনেক গান-কম্পোজিশন। আশ্চর্যজনক পারফরমেন্সে আমাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি। বিসিবির উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ ছিলো এটা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও।’
ভূমিকা শেষে একহাত নিয়েছেন সমালোচনাকারী সহকর্মী ও ভক্তদের। তার ভাষ্য, ‘আমরা মিউজিশিয়ান (সবাই না) ও ভক্তরা- সমস্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, ঘৃণা, অভিযোগের গরল তার (এ আর রাহমান) ওপর ঢেলে দিলাম। অভিযোগ তুললাম- এ আর রাহমান কীভাবে আমাদের সংস্কৃতি কলঙ্কিত করেছে, তিনি ভালো পারফরমেন্স করতে পারেননি- ইত্যাদি। ভেবে দেখুন, এই সমালোচনার একটি শব্দও তার সংগীতের ওপর বিশ্লেষণ করে গভীরভাবে লেখা বা গঠনমূলক নয়। তিনি যে গানগুলি পরিবেশন করেছিলেন সেগুলো নিয়েও বলা হয়নি। এই আলোচনায় মিউজিকের কিছুই নেই!’
নিজেদের গান ও অবস্থান দুটোই তুলে ধরেন হামিন, ‘আমরা (মাইলস) প্রত্যেকেই নানা সীমাবদ্ধতার সাথে এই ইভেন্টে পারফর্ম করেছি। আমাদেরকেও বাদ রাখেনি সমালোচকরা। এ আর রাহমানের সঙ্গে সমস্ত বাংলাদেশি (মাইলসসহ) পারফর্মারদের সাথে ফ্রি সুইংয়ে যেন গালি দেওয়ার সুযোগও নিলো তারা। আমরা এটা পারি না! আপনি করবেন? প্যাশন থেকে চার দশক ধরে সংগীত করছি। আমি একজন শিল্পী/সংগীতশিল্পী এবং মাইলস একটি ব্যান্ড হিসেবে এক মিনিটও নিজেদের ছোট করার সুযোগ দিতে চাইনি।’
শেষে লিখেন, ‘আমি লজ্জিত যে, আমরা আমাদের দেশে আমন্ত্রিত একজন সম্মানিত অতিথির সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো। তার সংগীত ও গৌরবান্বিত পরিবেশনাকে কালিমা দিলো। আমাদের এই ধরনের আচরণ বা অভ্যাস একান্তই আমাদের। আমরা এত নিচে পৌঁছে গেছি ভাবতেও লজ্জা লাগে! নিজেদের ঘৃণা জানানো উচিত! সত্যিই তাই!’