২২ বছরের বন্ধু অন্তিম শয্যায়! এই দৃশ্যও আমায় দেখতে হচ্ছে?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ১, ২০২২, ০৮:৪৩ এএম

২২ বছরের বন্ধু অন্তিম শয্যায়! এই দৃশ্যও আমায় দেখতে হচ্ছে?

ভারতীয় সংগীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের মৃত্যুবরণ করেছেন। মঙ্গলবার (৩১ মে) কলকাতায় গুরুদাস কলেজের নজরুল মঞ্চে এক কনসার্ট চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

কেকের এই আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলিউড ইন্ড্রাস্টিতে। খবর পেয়েই কলকাতার সেই হাসপাতালে পৌঁছেছেন সঙ্গীতশিল্পী ও প্রয়াত শিল্পীর বন্ধু জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দৃশ্যত শোকে ভেঙে পড়েন তিনি।

প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুর পর জিৎ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। গণমাধ্যমে শেয়ার করেছেন কেকের সঙ্গে তার অসংখ্য স্মৃতিকথা।  ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় জিৎ গাঙ্গুলির সেসব স্মৃতিকথা উঠে এসেছে।

 ‘খবরটা শোনার পরে বিশ্বাস করতে পারিনি। কী বলছেন সবাই? কী খবর শোনাচ্ছে সংবাদমাধ্যম? আমার ২২ বছরের বন্ধু কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ আর নেই! একটা সময় জানলাম খবরটা সত্যিই। কলকাতাকে শেষ গান শুনিয়ে বিদায় নিয়েছে আমার বন্ধু, সবার প্রিয় কেকে। সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে গিয়েছি হাসপাতালে। যদি শেষ মুহূর্তে আশ্চর্য কিছু ঘটে!

ঘটল না। আমার ২২ বছরের বন্ধু হাসপাতালের শয্যায় চিরঘুমে আচ্ছন্ন। বাইরে দাঁড়িয়ে আমায় সেটা দেখতে হচ্ছে! এটাও ঘটার ছিল?

ওর সঙ্গে আলাপ ২০০০ সালে। প্রথম দিন থেকে আমাদের হৃদ্যতা। খুব নিয়ম মেনে চলত কেকে। ঘড়ি ধরে ওঠা, বসা, খাওয়া, ঘুম। ঠিক যে ভাবে নিয়ম মেনে গানের রেওয়াজ করত। আবার শরীরচর্চার জন্যও আলাদা সময় বরাদ্দ ছিল। সব মিলিয়ে ৫৪-তেও তরতাজা যুবক। সেই মানুষটা কী করে বিনা নোটিসে ‘নেই’ হয়ে যেতে পারে?

একই প্রশ্ন ফোনে বার বার আমায় জিজ্ঞাসা করছেন ওঁর স্ত্রী। বৌদিকে কী জবাব দেব? অনেকেই বলছেন, এক জন শিল্পীর নাকি এর থেকে ভাল মৃত্যু আর হয় না। সুরের হাত ধরেই সুরলোকে পাড়ি জমালেন কেকে। আমি মানতে পারছি না। আমার বহু হিন্দি, বাংলা গানের গায়ক ও। সেই সব গান তৈরির সময়ের অজস্র স্মৃতি। সব ফেলে রেখে চলে গেল। আর রেখে গেল এক মুঠো জনপ্রিয় গান। ‘তড়প তড়পকে কে ইস দিল সে’ (হাম দিল দে চুকে সনম), ‘আঁখো মে তেরি’ (ওম শান্তি), ‘তুনে মারি এনট্রিয়া’ (গুণ্ডে), ‘তু যো মিলা’ (বজরঙ্গি ভাইজান), ‘ডোলা রে’ (দেবদাস), ‘হামকো প্যায়ার হুয়া’ (রেডি)র মতো গান আর কে গাইবে কেকে?’

কে কে হিন্দি, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড়, মারাঠি, গুজরাতি ও তামিল চলচ্চিত্রেও অসংখ্য গান গেয়েছেন। তিনি তাঁর স্পষ্ট ও শ্রুতিমধুর কণ্ঠ, কণ্ঠের বৈচিত্রতা এবং স্বরগ্রাম অনুযায়ী গায়কীর জন্য প্রসিদ্ধ। তাঁকে ভারতের অন্যতম বৈচিত্রপূর্ণ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়নসহ একাধিক পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন এবং দুটি স্ক্রিন পুরস্কার অর্জন করেছেন।

Link copied!