এই প্রথম কোনো বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতকে হারাল পাকিস্তান। ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি। কোথাও পারেনি পাকিস্তান। অবশেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে হারাল পাকিস্তান। তাও আবার দশ উইকেটে। এর আগে ১২বার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। প্রথমবার জিতল পাকিস্তান।
২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তান জিতেছিল ভারতের বিপক্ষে। সেটা ছিল আইসিসি ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম জয়।
ভারত ১৫২ রানের টার্গেট দিয়েছিল। জবাবে বিনা উইকেটে জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান (১৫২/০, ১৭.৫ ওভার)। অধিনায়ক বাবর আজম (৬৮) ও মোহাম্মদ রিজওয়ান (৭৮) খেলা শেষ করে বের হয়ে আসেন।
ভারত বিরাট কোহলি (৫৭) ঋসভ পান্ট (৩৯) এর ব্যাটে ভর করে ১৫১ রান তোলে। শাহেনশাহ আফ্রিদি ৩টি ও হাসান আলি ২ উইকেট নেন।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-২এ আজ ভারতকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। দু’দলের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ভার্সনে ১০ উইকেটে ম্যাচের ফলাফল নিষ্পত্তির ঘটনা এবারই প্রথম ।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেয় পাকিস্তান। বল হাতে নিয়েই ভয়ংকর হয়ে উঠেন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মাকে রানের খাতা খোলা আগেই লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন আফ্রিদি। খালি হাতে ফেরেন রোহিত।
নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে আরও একটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ভারতের আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুলকে বোল্ড করেন আফ্রিদি। ফলে ৬ রানেই ২ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর তৃতীয় উইকেটে সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে ২৫ ও চতুর্থ উইকেটে ঋসভ পান্থের সাথে ৫৩ রান যোগ করে ভারতকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক বিরাট কোহলি। সূর্য ১১ ও পান্থ ৩০ বলে ৩৯ রান করেন।
এক প্রান্ত আগলে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন কোহলি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৯১তম ম্যাচে ২৯তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদও পান তিনি। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে কোহলির বিদায় নিশ্চিত করেন আফ্রিদিই।
৪৯ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন কোহলি। এছাড়া রবীন্দ্র জাদেজা ১৩ ও হার্ডিক পান্ডিয়া ১১ রান করেন। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রান পায় ভারত।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া পাকিস্তানের আফ্রিদি ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। ৪৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলি।
জয়ের জন্য ১৫২ রানের লক্ষে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজম। পাওয়ার-প্লেতে ৪৩সহ ১০ ওভার শেষে ৭১ রান সংগ্রহ পায় পাকিস্তান।
১৩তম ওভারে ছক্কা হাকিয়ে হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন বাবর। ৪০ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করতে ৪০ বল মোকাবেলা করেন তিনি।
আর ১৫তম ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে ৪১ বলে ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছান রিজওয়ান। শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থেকে ১৭ দশমিক ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫২ রান তুলে পাকিস্তানকে দুর্দান্ত জয় এনে দেন রিজওয়ান-বাবর।
৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৫ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন রিজওয়ান। ৫২ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৬৮ রান করেন বাবর।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের নয়া রেকর্ড গড়লেন রিজওয়ান ও বাবর। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানের পক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটিও এই রিজওয়ান-বাবরের। এ বছরই সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জুটিতে ১৯৭ রান করেছিলেন রিজওয়ান-বাবর। ম্যাচ সেরা হন পাকিস্তানের আফ্রিদি।
আগামী ২৬ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। আর ৩১ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ভারত।