ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে ১২ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিসেম্বর ২১, ২০২১, ০৩:৩০ পিএম

ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে ১২ জনের মৃত্যু

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে ১২ জন মারা গেছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৪ জন।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাব দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন যে গতিতে ছড়াচ্ছে, তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। তবে আশঙ্কা থাকলেও আপাতত লকডাউন বা কঠোর স্বাস্থ্যবিধি আরোপের কোনো পরিকল্পনা বরিস জনসন সরকারের নেই।

ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, “ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এ বিষয়ে অনেক তথ্যই অজানা রয়ে গেছে। আরও বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য। আমরা কিছুটা সময় নিচ্ছি।  তার আগ পর্যন্ত আমরা আপাতত কোনো কঠোর বিধিনিষেধ প্রণয়ন করছি না।”

গত ২৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়।এর আগে ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

ব্রিটেনে এখনই লকডাউন নয়

ডেল্টার পরে সার্স কোভ-২ ভাইরাসের যে স্ট্রেনটি বিশেষজ্ঞদের সবচেয়ে চিন্তায় ফেলেছে তা হল এই ওমিক্রন। হু হু করে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে স্ট্রেনটি। ইতিমধ্যেই প্রায় ৮৯টি দেশে এর খোঁজ মিলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া এই স্ট্রেনটি এখন ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি ‘ডমিনেন্ট’ বা প্রভাবশালী স্ট্রেন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাব আরও জানান, ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ১০৪ জন হাসপাতালে ভর্তি।

তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির গুরুত্ব দিয়ে বড়দিনের আগে কোনও পদক্ষেপ করা থেকে বিরতই থাকছে প্রশাসন। যা কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। মনে করা হচ্ছে, বড়দিন উদ্‌যাপনের আগে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হলে বরিস সরকারের রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হওয়া আটকানো যাবে না বলেই মত তাদের। গত সপ্তাহে বরিস করোনা বিধি বাড়ানোর প্রসঙ্গ তোলায় পার্লামেন্টের বরিসের বিরুদ্ধে সরব হন তাঁর দলের লোকেরাও!

ব্রিটেন হেলদোল না দেখালেও ওমিক্রনের চোখরাঙানির সামনে কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলি। ইতিমধ্যেই চতুর্থ বারের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস। কড়াকড়ি বাড়ানোর পক্ষে জার্মানিও। আয়াল্যান্ডে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন বার এবং রেস্তরাঁ তাড়াতাড়ি বন্ধ করার নির্দেশ রয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ি, মঙ্গলবার  গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে ৪৪ জন মারা গেছেন। আর করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ৭৪৩ জন।দেশটিতে  এ পর্যন্ত করোনায় ১ কোটি ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ১২১ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৬১ জনের মৃত্যু  হয়েছে।

এদিকে, ওমিক্রন আতঙ্কের মাঝে এবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ঝুঁকির তালিকায় থাকা দেশে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে ইজ়রায়েল সরকার। প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এই প্রসঙ্গে জানান, তাঁর দেশ ইতিমধ্যেই অতিমারির পঞ্চম ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ওমিক্রনের খোঁজ মিলেছে থা্ইল্যান্ডেও। সোমবার(২০ ডিসেম্বর) সে দেশের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশ থেকে আসা বিমানযাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক বিচ্ছিন্নবাসের কথা ফের ভাবা হচ্ছে। তবে এর ফলে দেশের পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি

Link copied!