গ্রীষ্মের আগ মুহুর্তে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে আবার বাড়তে শুরু করেছে। প্রায় ২ মাস পর গত একদিনে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত শনাক্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৭ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ১৮ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। যা গত দুইমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর হারও আবার প্রায় ৬ শতাংশে উঠে এসেছে।
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিবৃতিতে করোনা পরিস্থিতির সবশেষ এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং নারী ৪ জন। এসময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ১৮ জন। আগের দিনের চেয়ে মৃত্যুসংখ্যা অর্ধেক কমলেও বিপরীতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১০৬ জন বেড়েছে। এছাড়া আগের দিনের তুলনায় ৩৫জন বেশি রোগী সুস্থ হয়েছেন।
আগের দিন (মঙ্গলবার) করোনায় ১৩ জনের মৃত্যু এবং ৯১২ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলো। এদিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলো ১ হাজার ২২৯ জন। আগের দিনের চেয়ে সুস্থতার হার দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ বেড়েছে।
এর আগে সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল, সেদিন ১ হাজার ৭১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯শর নিচেই ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবৃতিতে জানায়, গত এক দিনে নতুন করে ৭জনের মৃত্যুতে এপর্যন্ত করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা মোট ৮ হাজার ৪৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ হাজার ১৮ জন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় এপর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ১০৫ জন হয়েছে।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর শনাক্ত ও মৃত্যু কখনও বাড়তে আবার কখনও কমতে দেখা যায়। তবে সর্বশেষ কয়েকদিন শনাক্ত ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত এক দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ২৬৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬ হাজার ৩৬১৩ জন। এসময়ে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর গত দু’সপ্তাহ ধরেই মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ।
আগের দিন ( সোমবার) নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিলো ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, এদিন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ছিলো ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ছিলো ৯১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ছিলো ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ২১৯টি ল্যাবে ১৭ হাজার ৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭০টি নমুনা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৮৮টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮২টি।