জানুয়ারি ১২, ২০২২, ০৪:০২ পিএম
আগামী ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপের অর্ধেক মানুষই করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপজুড়ে এই ধরনে আক্রান্তদের পরিসংখ্যান দেখে সংস্থাটি এমনই ধারণা করছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ি, ইউরোপে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডব্লিউএইচও’র ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক ডা. হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, ‘ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টের মধ্যেই একে ছাড়িয়ে এ অঞ্চলে পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী ওমিক্রন ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ এসব দেশ ডেলটা ভ্যারিয়্যান্ট সামলেছিল। এখন ওমিক্রন ডেলটাকে ছাড়িয়ে গেছে।’
ডা. হ্যান্স ক্লুগ বলেন, ‘পরবর্তী ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে এ অঞ্চলের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত হবে।’
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিসংখ্যান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড এভালুয়েশনে বক্তৃতায় তিনি এই ভয়াবহ তথ্য জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ কর্মকর্তা আরও জানান, পশ্চিম ইউরোপ থেকে ভাইরাস দ্রুত বলকান দেশগুলো পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করেছে। ফলে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো ‘ব্যাপক চাপে’ রয়েছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রন আগের ভ্যারিয়্যান্টগুলোর তুলনায় রোগীকে গুরুতর অসুস্থ করে কম। তবে এ ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মাত্রা অনেক বেশি এবং পূর্ণডোজ টিকাপ্রাপ্ত লোকজনকেও আক্রান্ত করছে।
ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে ইউরোপের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খাবি খাচ্ছে। গত সোমবার যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৪২ হাজার ২২৪ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ৭৭ জন।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ের ভেরান গত সপ্তাহে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন,‘জানুয়ারি মাস পার করা হাসপাতালগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যাবে। ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীতে এরই মধ্যে হাসপাতালের সাধারণ শয্যাগুলো ভরে গেছে। আর, ডেলটায় আক্রান্তেরা আইসিইউগুলোতে রয়েছে।’
অন্যদিকে, পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে করোনায় মৃত্যু লাখ ছাড়িয়েছে।বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হিসাবে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে দেশটি। করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে অচিরেই দৈনিক সংক্রমণ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা।