পর্যবেক্ষণের পর টিকা নেয়ার অপেক্ষায় জনসাধারণ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১, ০৪:২৬ এএম

পর্যবেক্ষণের পর টিকা নেয়ার অপেক্ষায় জনসাধারণ

করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরবর্তী ধাপে কি হবে সে নিয়ে সংশয়ে রয়েছে সাধারন জনগণ। তাই আশপাশের টিকাগ্রহণকারীদের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে টিকা নেয়ার কথা ভাবছেন অনেকেই। ফলে দ্বিতীয় দিনের মতো টিকাদান কেন্দ্রে জনসাধারণের উপস্থিতি কম দেখা যায়। এদিকে গত রবিবার টিকাগ্রহণকারীদের কেউ কেউ হালকা অসুস্থ বোধ করলেও বেশিরভাগই এখন সুস্থ রয়েছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে বিরাজমান কিছুটা সংশয় ও ভয়-ভীতি থাকলেও খুব শিগগিরই এর অবসান হবে। টিকা গ্রহীতার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া না দেখে অনেকেই টিকা নিতে উৎসাহী হবে বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে গতকাল টিকা গ্রহণকারীদের অনেকেই রাতে হালকা জ্বর ও পেটে পীড়া অনুভব করছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের সহকারী সার্জন ডা. হাসান মাহমুদ দ্যা রিপোর্টকে বলেন, 'রাতে হালকা জ্বর অনুভব করেছি, পরে সেরেও গেছে। জ্বর বেশি হলেও প্যারাসিটামল খেতে বলা হয়েছিল, তবে আমার জ্বর নিয়ন্ত্রনেই ছিল। আজকে কর্মেক্ষেত্রে চলে এসেছি, কাজ করতেও কোন সমস্যা হচ্ছে না।'

রাজধানীর আজিমপুর কলোনির গৃহিণী নাসিমা বেগম জানান, 'টিকা নেওয়ার সময় কিছুটা নার্ভাস ফিল করেছি, তেমন কোন সমস্যা হয়নি। আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলেছিল, কোন খারাপ লাগেনি। তারপর বাসায় চলে এসেছি।'

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তাসমিনা পারভীন জানান, 'দুটি বুথে গতকাল থেকে এপর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনকে টিকা দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কারো কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লক্ষ্য করেননি।'

ঢামেকের নাক, কান, গলা বিভাগের সার্জন ড. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি টিকা নিলে কিছুটা সাইড-ইফেক্ট হয়। কারো হয়, কারো হয় না। তবে এটা কোন সমস্যা না। আমাদের বিভাগের অনেক ডাক্তার টিকা নিয়েছেন, কেউ কেউ হালকা জ্বর অনুভব করেছেন। এখন স্বাভাবিক আছেন।‘

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল টিকা নেয়া ঢামেকের আরেক চিকিৎসক দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বাসায় আসার পর বিকেল ৫টা থেকে শরীর খারাপ লাগা শুরু করে। রাতে জ্বর বেড়েছিল। প্যারাসিটামল খেয়েছি, এখন ভালো আছি।‘

তিনি আরও বলেন, ছোটবেলায় হেপাটাইসিস-বি টিকা নেবার পর অনেকটা এমন অনুভূতি হয়েছিল।

এইদিকে, রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে গতকাল থেকে এ পর্যন্ত ১৩০ জনের বেশি টিকা নিয়েছেন।

হাসপাতালের এনাসথিওলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানায় নি। আধাঘন্টা পর্যবেক্ষণের পর সবাই সুস্থ, স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে।'

তিনি আরও বলেন, ‘তবে বাড়ি যাওয়ার পর যদি কেউ কোন খারাপ লাগা অনুভব করেন তাহলে সরাসরি নির্দিষ্ট  ইউনিটে যোগাযোগ করতে বলেছি।‘

প্রায় ষোলটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত টিকাগ্রহণে আগ্রহীদের অনলাইন নিবন্ধনের জন্য বলা হয়েছিল। টিকা দেয়ার প্রথম ধাপে রয়েছেন মধ্যে মন্ত্রী, প্রথম সারির সরকারি কর্মকর্তা, ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিকসহ, ৫৫ বছরের বেশি মানুষজন। প্রথম পর্বে ৬০ লাখ টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা করা হলেও, তা এখন কমিয়ে ৩৫ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে ৩ লাখের অধিক মানুষ টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

Link copied!