প্রশ্নপত্রে মুদ্রণজনিত ভুল: স্থগিত কারিগরির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ৬, ২০২২, ১১:৫৩ পিএম

প্রশ্নপত্রে মুদ্রণজনিত ভুল: স্থগিত কারিগরির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা

প্রশ্নপত্রে মুদ্রণজনিত ভুলের কারণে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীন এইচএসসির (বিএমটি) একাদশ শ্রেণির বাংলা-১ (নতুন ও পুরোনো পাঠ্যসূচি) এর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। 

রোববার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সুলতান হোসেন স্বাক্ষরিত এক জরুরি নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ২০২২ সনের এইচএসসি (বিএমটি) একাদশ শ্রেণির বাংলা-১ নতুন ও পুরাতন সিলেবাসের (বিষয় কোড: ২১৮১১ ও ১৮১১) পরীক্ষা অনিবার্য কারণ বশতঃ স্থগিত করা হলো। স্থগিতকৃত বিষয়ের সময়সূচি পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে প্রশ্নপত্রে মুদ্রণ সমস্যার কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। দুই ঘণ্টার পরীক্ষাটি আজ দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। শিগগির নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।’

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খান বলেন, ‘নতুন সিলেবাসের অনেক পরীক্ষার্থী পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র পাওয়ার অভিযোগ করার পর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। আমরা সারা দেশে অনেক কেন্দ্র থেকে এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কিছু কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসের শিক্ষার্থীরা নতুন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র এবং নতুন সিলেবাসের পরীক্ষার্থীরা পুরোনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র পেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, আমাদের একাদশ শ্রেণিতে এ বছর নতুন সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভুল করে পুরাতন সিলেবাসে প্রশ্ন ছাপা হয়ে গেছে। আগামী দুই- এক দিনের মধ্যেই আবার নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে তারিখ ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে সারাদেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। রোববার বেলা ১১টা থেকে এ পরীক্ষা শুরু হয়। চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন পরীক্ষার্থীরা। তবে যেসব পরীক্ষার্থী দেরি করে কেন্দ্রে এসেছেন তাদের রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, দেরির কারণ লিখে হলে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

এ বছর ২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন ছাত্রী।

এ বছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৩০ জন। মোট ২ হাজার ৬৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থীরা এক হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৪৪৮টি কেন্দ্র ৯৪ হাজার ৭৬৩ পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। এদের মধ্যে ৫১ হাজার ৬৯৫ ছাত্র এবং ৪৩ হাজার ৬৮ জন ছাত্রী।

এছাড়া এ বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় এক লাখ ২২ হাজার ৯৩১ পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। এর মধ্যে ৮৮ হাজার ৯১৮ ছাত্র এবং ৩৪ হাজার ১৩ জন ছাত্রী। এ বছর ১ হাজার ৮৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৬৭৩টি কেন্দ্র।

এবছর পরীক্ষার নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবসৃষ্টিকারী ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক কোনভাবে পাবলিক পরীক্ষায় বেআইনি কাজ করলে সে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান-প্রধান ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হবে।

পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (যেমন পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ছাড়া অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।

প্রশ্নপত্র বিতরণের আগে সময়সূচি অনুযায়ী বিষয়, বিষয় কোড, পত্র ও সেট কোড নিশ্চিত হয়ে কক্ষ পর্যবেক্ষকরা বিতরণ করবেন।

এর আগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবমুক্ত, নকলমুক্ত, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Link copied!