রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান হলের ধসের ঘটনার কারণ ও কাজে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শনিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর পৌনে একটার দিকে দুদকের এই তদন্ত দল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার শাহরিয়ার রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ।
প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের মিটিং শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘আমরা দুদকের যোগাযোগ নম্বরে (১০৬) অভিযোগ পাই। এখানে এসে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানায়, চলতি বছরের গত ৩০ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের এক অংশের ছাদ ধসে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৯ জন নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেই রাতেই জরুরি সভা ডেকে ওই ঘটনার কারণ নির্ধারণে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেসময় তদন্ত করে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনিয়ম পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
তবে আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বালিশকাণ্ডে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ কন্সট্রাকশনকে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন জানায়, ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বালিশকাণ্ডে বেশ আলোচিত ছিল তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদেরই একটি ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।
বালিশকাণ্ডের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে পড়া ঘটনায় আবারও আলোচনায় আসে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, ‘দুদক এসেছিল নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের দুর্ঘটনার বিষয়ে। তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিল, আমরা দিয়েছি।
উল্লেখ্য, ২৪ হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে নির্মিত এই হল ১০ তলাবিশিষ্ট হবে। ভবনের মধ্যে থাকবে তিনটি ব্লক। প্রায় ১ হাজার আসনবিশিষ্ট এই হলের সব কক্ষই হবে দুই আসন বিশিষ্ট। পুরো ভবনে চারটি লিফটের ব্যবস্থা থাকবে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ওঠানামা করতে পারবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন এই হলের নির্মাণকাজ করছে।