বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতেই ব্যবসাবান্ধব বাজেট : অর্থমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ৪, ২০২১, ০৬:১৯ পিএম

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতেই ব্যবসাবান্ধব বাজেট : অর্থমন্ত্রী

দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতেই  একটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুন) বিকেল বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এ বছরও ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই  সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের সুযোগ বৃদ্ধি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট একটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট। এই বাজেটে ব্যবসায়ীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যেন ব্যবসাযীরা নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন। এ কারণে আমরা বাজেটে ব্যবসায়ীদের অনেক বেশি সুযোগ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কর ছাড় দেওয়া হয়েছে, যেন করের পরিমাণ না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানো যায় এবং এর মাধ্যমে আরও বেশি করে রাজস্ব আহরণ করা যায়। করের পরিমাণ না, করের আওতা বাড়ানো সম্ভব হলে রাজস্ব বাড়বে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা দেশীয় শিল্প বিকাশের পক্ষে। সেজন্য সবসময় ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর পক্ষে। ধারাবাহিকভাবে তা কমানো হবে। আর কখনো ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানো হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কর কমালেও ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা হবে

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর কমানোর কারণে রাজস্ব আয় সাময়িকভাবে কিছুটা কমলেও রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্র বাড়িয়ে ভবিষ্যতে রাজস্ব বাড়ানো হবে। আমরা ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ করে  দিতে চাই। সেজন্য কর কমানো হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব কখনো ফিক্সড রাখা যাবে না। উন্নত বিশ্নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবাসায়ীদের পাশে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শুধু রাজস্ব আয় বাড়ানোই আমাদের প্রদান উদ্দেশ্যে নয়। আমাদের আরও অনেক উদ্দেশ্যে রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো কর্মসংস্থান তৈরি করা। আর কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।

বাজেটে ঋণের পরিমান যথাযথ 

বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজটে ঋণের পরিমাণ বেশি হয়নি। ঋণ না করলে টাকা কোথায় থেকে আসবে? ব্যয় করলে আয় হবে, বিনিয়োগ বাড়বে। আমাদের রেমিট্যান্স গ্রোথ ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ। আমাদের এই বছর লক্ষ্য ২৫ বিলিয়ন রেমিট্যান্স, আমরা তা অর্জন করব। এরই মধ্যে ২৩ বিলিয়ন ডলার অর্জন করা সম্ভবও হয়েছে।

বাজেটের ঘাটতি সহজেই পূরণ হবে

বাজেট ঘাটতি ও জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে সারাবিশ্বের প্রবৃদ্ধি নিচের দিকে গেলেও আমাদেরটা যায়নি। বরং আমরা ওপরের দিকেই যাচ্ছি। আমরা যখন যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, সেটাই আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্জন সারাবিশ্বেই প্রসংশিত। তাই জিডিপি প্রবৃদ্ধিও অর্জন করা সম্ভব। বাজেটে যে ঘাটতি আছে, সেটিও আমরা সহজেই পূরণ  করতে পারব।

কর সুবিধা পেলে চাকরির ক্ষেত্র বাড়বে

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরির জন্যই তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূতসহ সব কোম্পানির করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিগুলো কর সুবিধা পেয়ে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসতে পারবে বা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে পারবে। এর মাধ্যমে চাকরি হারানো লোকজন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাদের হারানো চাকরি ফিরে পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ অন্যরা যুক্ত ছিলেন।

Link copied!