বাজেট প্রতিক্রিয়া : বাস্তবায়ন, ঘাটতি পূরণ ও সুশাসন নিশ্চিত নিয়ে সন্দিহান

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৪, ২০২১, ০৫:৪২ এএম

বাজেট প্রতিক্রিয়া : বাস্তবায়ন, ঘাটতি পূরণ ও সুশাসন নিশ্চিত নিয়ে সন্দিহান

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবন্ধব বলছে বিভিন্ন সংগঠন। তবে বাস্তবায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে। এ বাজেটের কিছু বিষয়ে সংশোধন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

বড় বাজেটে সুশাসন বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ : এফবিসিসিআই

জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার অবাস্তব নয় বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। তবে সুশান প্রতিষ্ঠা বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া সরকারকে ঋণ দিলে ব্যাংকগুলো অন্য বেসরকারি খাতকে ঋণ দিতে চায় না। এজন্য কম সুদে বৈদেশিক অনুদান সংগ্রহের আহ্বান জানায় তারা।

বাজেট বাস্তবায়নের স্বচ্ছতা ও দূর্নীতিমুক্ত থাকা দরকার : টিআইবি

একইসঙ্গে কোভিড নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাতের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ খাতসমূহে বরাদ্দ বৃদ্ধিই নয়, সার্বিকভাবে বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট পথরেখা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে নতুন করে ঘোষণা না দেওয়াকে সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছে তারা।

রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন বড় চ্যালেঞ্জ : ঢাকা চেম্বার

বর্তমান বাজেটে রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন একটি চ্যালেঞ্জ। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করোনা সংক্রমণ রোধ করা এবং সবার জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। যদিও এটি একটি ব্যয়বহুল বাজেট, এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের আর্থিক প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধি ও জনগণকে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় বরাদ্দে উদ্যোগ রয়েছে বলে জানায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স।

স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ যথেষ্ট নয় : সিপিডি

করোনা মহামারির এই সময়ে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।স্বাস্থ্যখাতে টিকাদানের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু এটা পর্যাপ্ত নয়। এ খাতের বরাদ্দ আগের বছরগুলোর মতোই রাখা হয়েছে। করোনা মহামারির অনিশ্চিত একটি সময়ে স্বাস্থ্যের জন্য এই বরাদ্দ অনেক কম। একইভাবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতেও বরাদ্দ বেড়েছে সামান্য। 

ভবিষত প্রজন্মের উপড় ঋণের বোঝা বাড়বে : সিপিবি

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত পঞ্চাশতম বাজেট প্রস্তাবকে ৯৯ ভাগ মানুষের স্বার্থবিরোধী, গতানুগতিক, আমলাতান্ত্রিক আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি)। বাজেটের ঘাটতি ৬ শতাংশেরও বেশি মেটানোর জন্য নতুন করে অভ্যন্তরীণ খাত ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাঁধে বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে।

বাজেটে আয় বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে : জেএসডি

ঘোষিত বাজেট বিপজ্জনক, আয় বৈষম্যের সহায়ক বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি। পঞ্চাশতম বাজেটে সামাজিক বৈষম্য নিরসন করার কোনো পরিকল্পনার প্রতিফলন হয়নি, বরং এ বাজেট বৈষম্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সরকারের উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রবণতা বাংলাদেশকে উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ এবং বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে রূপান্তর করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা। 

নতুন ধূমপায়ী বাড়বে : প্রজ্ঞা 

প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট বাজারের প্রায় ৭২ শতাংশ দখলে থাকা নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী ধূমপানে উৎসাহিত হবে বলে জানায় প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা। 

Link copied!