জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। এরই মধ্যে লঞ্চের ভাড়া শতভাগ বাড়ানোর দাবিতে এবার লঞ্চ না চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন মালিকরা। শনিবার (৬ নভেম্বর) লঞ্চ মালিকদের সংগঠণের ডাকা জরুরি বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের সদস্য ও অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চের মালিক নিজামউদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আমাদের পক্ষে লঞ্চ চালানো সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা আজ থেকেই লঞ্চ না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সদরঘাটসহ দেশের কোথায় আজ থেকে লঞ্চ চলবে না।
এবিষয়ে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কথা ছিল দুপুরের মধ্যে আমাদের ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু সরকার এতে সাড়া দেয়নি। এদিকে লঞ্চ মালিকরা বলছেন, লস দিয়ে তারা আর লঞ্চ চালাবেন না। আর তাই সদরঘাটের টার্মিনাল থেকে সব লঞ্চ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদের (বীর বিক্রম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, সাংগঠনিকভাবে আমরা এখনও ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে লঞ্চ মালিকরা লঞ্চ চালাবে না বলে জানিয়েছেন। তাই তারা তাদের লঞ্চ সরিয়ে নিচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) থেকে ডিজেল-কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন মালিকরা। লঞ্চ মালিকরা ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সরকারের কাছে।
এর আগে ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থা থেকে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের কাছে লঞ্চ ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব পাঠানো হয়।
প্রস্তাবে প্রতি লিটার ডিজেলের মূল্য ১৫ টাকা বাড়ানোর পেক্ষাপটে লঞ্চ ভাড়া ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ১ টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে ৩ টাকা ৪০ পয়সা এবং ১০০ কিলোমিটারের বেশি ১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা।
আনুষ্ঠানিক ধর্মঘটের ঘোষণা না দিলেও জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) নৌযানের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল লঞ্চ মালিক সমিতি। আজ শনিবার দুপুরের মধ্যে ভাড়া সমন্বয় না করলে বিকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছিলেন মালিকরা। কিন্তু দুপুরের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না আসায় অঘোষিত ধর্মঘটে যাচ্ছেন লঞ্চ মালিকরা।