অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০১:০৫ পিএম
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,বাংলাদেশে সব থেকে বড় দুর্যোাগ হচ্ছে দেশবিরোধী চক্র। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে দেশবিরোধী চক্র মানবসৃষ্ট দুর্যোগ তৈরি করতে চায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সফল; তবে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিনাজপুরের বিরলে উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সব থেকে বড় দুর্যোাগ হচ্ছে দেশবিরোধী চক্র। যারা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া, মর্যাদার জায়গায় অবস্থান করা, বিশ্বসভায় বাংলাদেশের যে মর্যাদার অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে, এগুলো দেখে যারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে, বাংলাদেশের মধ্যে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ তৈরি করতে চায়; তাদেরকে মোকাবিলা করতে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, দেশবিরোধী চক্র সরকারের উন্নয়ন মেনে নিতে পারছেনা। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে, বাংলাদেশের গ্রামীন জনপদগুলো উন্নত হচ্ছে, বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় সমকক্ষতা অর্জন করছে, করোনা মহামারীর মধ্যেও অর্থনীতির একটি বিস্ময়কর জায়গায় অবস্থান করছি- বাংলাদেশের এসব অর্জন দেশবিরোধী চক্র মেনে নিতে পারছেনা।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর বন্যা হয়েছিল। ৯ মাস বাংলাদেশ পানিবন্দী ছিল। এ সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল দুই কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, মানুষ না খেয়ে মারা যাবেনা। আমরা সেসময় দেখেছি, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে ছাত্র-যুবকেরা সেসময় স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে এ বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এটা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছিল। ৯ মাস পানিবন্দী থাকার পরে একটি দেশ কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল! সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই প্রলয়ংকারী বন্যা আমরা মোকাবিলা করেছিলাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এমন জায়গা ছিল, আমাদের যাওয়ার মতো অবস্থা ছিলনা। হেলিকপ্টারে করে ওপর থেকে আমাদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে হয়েছে। মানুষকে রক্ষা করার জন্য সেসময় ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্সের অসামান্য ভূমিকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন, প্রত্যেকটি উপজেলায় আমাদের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন থাকবে। তারপর আমরা দেখেছি, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ কার্যক্রমটি এগিয়ে যায়নি। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের যে অর্জন, আমরা যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারি। আমাদের দক্ষতা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা, দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে পারদর্শিতার প্রমাণ আমরা পাই। যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
চলমান করোনা মহামারীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষ বিনা চিকিৎসায় না খেয়ে মারা যাবে; কিন্তু বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আমি বিরলের এ মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন দেশরত্ন শেখ হাসিনা; তখন নিশ্চয়ই আমরা করোনা মোকবিলা করত সমর্থ হবো। আজকে আমরা সে জায়গায় পৌঁছে গেছি। করোনা আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছি দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাহসী এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।
বিরল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা, পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়।
পরে প্রতিমন্ত্রী বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় অংশ নেন।