বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য রাত ৮টার পর দেশের দোকান, প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচাবাজার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে বেশ কিছু দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান এসময়ের পরও খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
রবিবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সরকারি নির্দেশনার বাইরে যেসব দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে তা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব এহছানে এলাহী।
রাত ৮টার পরও খোলা থাকবে যেসব দোকান প্রতিষ্ঠান
১. ডক, জেটি, স্টেশন, বিমানবন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস।
২. তরিতরকারি, মাছ, মাংস, দুগ্ধজাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান।
৩. ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।
৪. দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান।
৫. তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান।
৬. খুচরা, পেট্রল বিক্রির জন্য পেট্রলপাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটরগাড়ির সার্ভিস স্টেশন।
৭.নরসুন্দর এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান।
৮. যেকোনো ময়লা নিষ্কাশনকারী প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
৯. যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো অথবা পানি সরবরাহ করে এমন প্রতিষ্ঠান।
১০. ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।
বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সোমবার থেকে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান-মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে পদক্ষপে গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালনপূর্বক সারাদেশে রাত ৮টার পর দোকান, শপিং মল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার ইত্যাদি খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।