ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০১:৩৮ পিএম
সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য এবং সুপ্রশিক্ষিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো দুর্যোগে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও সেবা দিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে গৌরবের সঙ্গে কাজ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে যাচ্ছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৭৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
সিরিয়া ও তুরস্কে উদ্ধারকার্যরত সশস্ত্র বাহিনীর সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি জাতির পিতা দিয়ে গিয়েছেন, সেটি হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি। ‘বহিঃশত্রুর আক্রমণ যদি হয় সেটা যেন মোকাবিলা করতে পারি, তার জন্য উপযুক্ত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশে রূপান্তরিত করতে চাই। তাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা মহামারির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি থেকে আমরা সফলভাবে বের হয়ে আসতে পেরেছি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। উন্নত দেশগুলোও মন্দার কবলে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন আপনাদের তো কিছুই নেই কীভাবে দেশকে গড়ে তুলবেন। তিনি বলেছিলেন আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। আমি মাটি ও মানুষ দিয়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমি সেই কথা বিশ্বাস করি। আমি চাই প্রত্যেকটা নাগরিক যে যা পারেন উৎপাদন করেন। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার ধাক্কা যেন বাংলাদেশে না আসে।’
এর আগে তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু সব সেনানিবাসকে আধুনিকায়ন করার কাজ শুরু করেছিলেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের যাত্রায় প্রতিটি সেক্টরে কাজ শুরু করেছিলেন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে। তাকে হত্যার পর একটা সময় এ দেশে ফিরে এসে, আমি আমার পিতার হত্যার বিচারও চাইতে পারিনি। আইন করে তা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম বাংলার মানুষের সেবায় কাজ করতে। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, এরপর মানুষ সত্য ইতিহাস জানার সুযোগ পায়। পাশাপাশি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য, সুপ্রশিক্ষিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এর আগে সকালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৭৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে পৌঁছান তিনি। এরপর প্যারেডের অভিবাদন গ্রহণ এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত সবার উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গৌরবদীপ্ত ৭৫ বছর (প্লাটিনাম জুবিলী) পূর্তি অনুষ্ঠান মহাসমারোহে দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে গতকাল বুধবার শুরু হয়। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এ পূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। সেনাপ্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৩ এবং দশম টাইগার্স পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তার উদ্দেশে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন।