গ্যাস সংকট মোকাবিলায় ভোলার গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া খুব বেশি বিকল্প নেই বলে মনে করছেন জ্বালানিখাত সংশ্লিষ্টরা।
দ্বীপ জেলাটির সঙ্গে পাইপলাইন না থাকায় সিএনজি কিংবা এলএনজি আকারে গ্যাস আনা ব্যয়বহুল হলেও, তাতে বিপুল পরিমাণ ডলার সাশ্রয়ের সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করেছেন তারা।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ভোলার গ্যাস ট্রান্সপোর্টেশন শীর্ষক সেমিনারে এমন মতামত উঠে আসে।
ভোলা থেকে বর্তমানে সিএনজি আকারে ৫ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে প্রতি ঘনমিটারে পরিবহন খরচ ৩০ টাকা ৬০ পয়সাসহ গ্যাসের দাম দাঁড়াচ্ছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। যা পাইপলাইনে সরবরাহ করা গ্যাসের তুলনায় দেড়গুণ বেশি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে করা সিএনজি সরবরাহ চুক্তি নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। বিশেষ করে পরিবহন খরচ বেশি ধরার অভিযোগ করেন অনেকেই।
এ বিষয়ে সিএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলী সেমিনারে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা নাকি বিশেষ বিবেচনায় দরপত্র পেয়েছি।
‘বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা অভিজ্ঞতার আলোকেই কাজটি পেয়েছি। তখন আরও পাঁচটি কোম্পানি আগ্রহপত্র জমা দিয়েছিল। দরপত্রে ইন্ট্রাকোকে কোন রকম বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি,’ যোগ করেন তিনি।
রিয়াদ দাবি করেন, আমাদের কোম্পানি ছাড়া আর কোন কোম্পানি এতো দ্রুত গ্যাস সরবরাহ করতে পারতো না।
দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলোর মজুদ ফুরিয়ে আসায় প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে উৎপাদন। এক সময় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে দৈনিক ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেলেও ২৯ ডিসেম্বর উৎপাদন হয়েছে ১৯৩২ মিলিয়ন ঘনফুট।
অন্যদিকে দ্বীপ জেলা ভোলাতে দুইটি গ্যাস ফিল্ড আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে ৯টি কূপ গ্যাস উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যেগুলোর দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ১৯০ মিলিয়ন ঘনফুট।
কিন্তু স্থানীয়ভাবে চাহিদা না থাকা এবং মূল ভূখণ্ডে আনার জন্য পাইপলাইন না থাকায় মাত্র ৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলন করা হচ্ছে। এখনই আরও ১১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সেখানে আরও ১৫টি কূপ খননের লক্ষ্যে কাজ করছে পেট্রোবাংলা।
ভোলার উদ্বৃত গ্যাস সিএনজি আকারে আনতে চলতি বছরের ২১ মে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসির সঙ্গে প্রথমে ৫ মিলিয়ন ও দ্বিতীয় ধাপে আরও ২০ মিলিয়ন গ্যাস সিএনজি আকারে সরবরাহের চুক্তি করে সরকার।
প্রথম ধাপের ৫ মিলিয়ন গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জের ১৮টি শিল্পকারখানায় সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের ২০ মিলিয়ন যথাসময়ে (অক্টোবর ২০২৪) সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি। যে কারণে চুক্তি রিভিউ করার চিঠি দিয়েছে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি।
চুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে রিয়াদ আলী বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি, চুক্তিতে একটি জরুরি পরিস্থিতির ইস্যু থাকে। আমরা ছয় মাস সময় চেয়েছি। আমরা কাজ অনেকদূর এগিয়ে এনেছি, নদীপথে আনার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।