এই ধ্বংসলীলা যারা করেছে তাদের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই: শেখ পরশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১, ২০২৪, ১১:২২ পিএম

এই ধ্বংসলীলা যারা করেছে তাদের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই: শেখ পরশ

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

এই ধ্বংসলীলা যারা করেছে তাদের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেছেন আমাদের কোমলমতি সন্তানদের কাঁধে ভর করে যারা সরকার উৎখাতের নীল নকশা করেছিল তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট মর্মন্তুদ হত্যাকান্ডে নিহত সকল শহীদ-স্মরণে কোরআন খতম, দোয়া ও খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, “আজকে শোকাবহ আগস্ট মাসের প্রথম দিন। এই শোকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্প্রতি হতাহতের বেদনা। এই ধ্বংসলীলা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অতিগর্হিত অপচেষ্টা; সেই নীল নকশা। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে যেই স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শত্রুরা জড়িত ছিল। সেই শত্রুদের উত্তরসুরীরা আজকের এই আগ্রাসন এবং ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। তাদের ধ্বংসলীলার ধরণ দেখেই বোঝা যায় তারা অতি পরিচিত। যেভাবে রগ কেটে, যেভাবে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছিল একাত্তরে, ২০১৩ সালে এবং বিভিন্ন সময় সেই একই ধরন, একই প্রক্রিয়া এখানেও উপস্থিত।

আজকে অবশেষে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার একটি নির্বাহী ঘোষণা আসতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন এই দাবি করে আসছিল। আপনারা জানেন এই জামায়াত-শিবিরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল ৭৫-এর খুনি জিয়াউর রহমান। খুনি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতা এবং মদদেই এই জামায়াত-শিবির বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। আজকে এই  ঘোষণা আসার পরে ওরা আবারও মরণ কামর দিতে পারে। আপনাদের এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং নিঃশর্তভাবে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সম্প্রতিকালে আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে এদের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে, সবার প্রতি সমবেদনা এবং সাধারণ ছাত্ররা, সাধারণ মানুষ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিক নিহত এবং আহত হয়েছে তাদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। শুধু একটি কথা বলতে চাই, ঐক্যবদ্ধভাবে এদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে। যে প্রতিরোধ গত দুই সপ্তাহে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করে আসছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে প্রশিদ্ধ। আপনারা বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর আস্থা রাখেন তিনি এই সংকট মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন।”

তিনি আরও বলেন, “আজকে জাতিসংঘ আমাদের এই হতাহতের ঘটনা তদন্তে অংশগ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহ ব্যক্ত করেছে এবং বর্তমান সরকারও তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় সরকার কতটা আন্তরিক প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে। একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার সফল সমাধান হবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।”

সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন, “আপনারা দেখেছেন তারা কিভাবে সারাদেশে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা তারা ধ্বংস করেছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকদের কি নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাদের হামলায় আহত। এ রকম নৃশংস-নির্মম হামলা কোনও সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব না। জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা সারা বাংলাদেশে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ৭১-এর পরাজিত শক্তি, ৭৫-এর পরাজিত শক্তি, সবশক্তি এক সঙ্গে মিলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এই ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রাণপন চেষ্টা করেছে মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু জঙ্গিরা চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে জনগণের সেবামূলক সকল প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এতে বোঝা যায় তারা একাত্তরের পরাজয়ের শোধ নিয়েছে ২০২৪ সালে এসে।”

তিনি আরও বলেন, “আসুন আমরা সবাই এক্যবদ্ধ হই। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে যে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে সেই বাংলাদেশকে রুখে দেওয়ার জন্য এই অপচেষ্টা। বাংলার মানুষ আজকে সজাগ হয়েছে, তারা বুঝতে পেরেছে এটা কোনও কোটা আন্দোলনকারীর আন্দোলন নয়। কোটা তো সরকার মেনে নিয়েছে। তাহলে এটা কিসের আন্দোলন? এটা হলো দেশধ্বংস করার আন্দোলন। আর এদেরকে প্রতিহত করার জন্য আমরা যুবলীগ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো, রাজপথে থেকেই সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিয়ে যাবে যুবলীগ।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ, চেয়ারম্যান-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। সঞ্চালনা করেন আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

কর্মসূচি শেষে সম্প্রতি বিএনপি-জামাত-শিবিরের হামলায় আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যান বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, মোঃ সোহেল পারভেজ, আবু মনির মোঃ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল হাই, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহমান, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Link copied!