একই জায়গায় পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ডাক দিয়েছে তাবলিগ জামায়াত। আগামী মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাবলিগের দুই পক্ষই সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
এর মাধ্যমে বেশ কয়ে কছর শান্ত থাকার পর তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুপক্ষ আবারও মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াচ্ছে বলে বাংলা ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রায় এক দশক আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশীদারিত্ব নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা। ২০১৫ সালে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিরোধিতা করেন পাকিস্তান ও ভারতের কয়েকজন মুরুব্বি।
২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুইভাগ হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ২০১৯ সাল থেকে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগের কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।
একাধিক দায়িত্বশীল আলেম জানান, আগামী ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘উলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে তাবলিগের সাদবিরোধী অংশ। ‘দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বিনের হেফজতের লক্ষ্যে’ অনুষ্ঠেয় এ সমাবেশের আয়োজনে রয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সংশ্লিষ্টরা। প্রকাশ্যে না থাকলেও জেলাভিত্তিক ও বিভিন্ন পয়েন্টের মার্কাজ মসজিদে সমাবেশ বাস্তবায়নে কাজ করছেন জুবায়েরপন্থী তাবলিগের সদস্যরা।
গত শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের জামিয়া হোসাইনিয়া আরজাবাদ মাদ্রাসায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি কমিটি করা হয়। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুককে।
ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি বিমান হামলায় প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত
মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি সরকার পতনের পর দেশের নানা এলাকায় মাদ্রাসা-মসজিদ নিয়ে নানা ঝামেলা চলছে। এছাড়া, তাবলিগ জামাত নিয়ে সাদপন্থীরা ঝামেলা করার পাঁয়তারা করছে। সেজন্যই দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা মাশায়েখদের আহ্বানে এ মহাসম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া।’
এদিকে একই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাল্টা সমাবেশ ডেকেছে সাধারণ মুসল্লি পরিষদ বাংলাদেশ। তাবলিগ জামাতের সাদপন্থী অংশের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা এ সংগঠনটির মাধ্যমে রাজপথের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকে।
৩১ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনার বরাবর করা আবেদনপত্রে সাধারণ মুসল্লি পরিষদ বাংলাদেশের সদস্য সচিব মীযানুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে ষড়যন্ত্র ও দেশের বিভিন্ন জেলায় ইজতেমা ও মারকাজে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় মহাসমাবেশ আয়োজন করা হবে।