জুন ২১, ২০২৩, ০৪:৪১ পিএম
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের বুলনপুর এলাকার কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের সামনের সড়কে দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই প্রার্থীরই নির্বাচনী ক্যাম্পের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর করার অভিযোগে তাঁর সমর্থকরা নগরীর ভেড়িপাড়ার মোড়ে অবস্থানরত রুহুল আমিনের সমর্থকদের ধাওয়া করেন। পাশেই একটা খড়ির দোকান থেকে কাঠ নিয়ে তারা এই হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দক্ষিণ পাশে রুহুল আমিনের একটি নির্বাচনি কেন্দ্র ছিল। আশরাফুল ইসলামের সমর্থকরা সেই কেন্দ্রের প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো ভাঙচুর করেন। অপরদিকে রাজশাহী পিটিআই কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনি কেন্দ্রে কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
কাউন্সিলরপ্রার্থী রুহুল আমিন টুনু অভিযোগ করে বলেন, এই কেন্দ্রটি আমার বাসার কাছে হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি ব্যাপক হয়। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম বাবু এই ভোট বানচাল করতে দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে কেন্দ্রে হামলা চালায়। এতে আমার বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছেন। আতঙ্কিত হয়ে কিছুক্ষণের জন্য ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে পারেনি। তবে পরে ভোটার উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, আশরাফুল ইসলাম হেরে যাবেন বুঝতে পেরে চার-পাঁচশ লোক নিয়ে তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
কাউন্সিলরপ্রার্থী আশরাফুল ইসলাম বাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টুনুর সমর্থকরা আমার দুটি নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে।
এদিকে কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বিবেকানন্দ বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষ হয়েছে কেন্দ্রের বাইরের রাস্তায়। এতে কেন্দ্রে কোনো প্রভাব পড়েনি। এক মিনিটের জন্য ভোট বন্ধ হয়নি।
রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৫টি, ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ১৫৩টি। এর মধ্যে ১৪৮ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক হাজার ১৫৩টি কক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। রাজশাহী সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন। আর নারী এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয় জন। রাজশাহী সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০টি এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের জন্য ওয়ার্ডের সংখ্যা ১০টি।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে, নিরাপত্তার জন্য রাজশাহীর প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন। এছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ফোর্স ৩০টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১০টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স ৬টি, র্যাবের ১৬টি টিম এবং ৭ প্লাটুন বিজিবি মাঠে থাকবে। নির্বাচনে ৪৩ জন নির্বাহী হাকিম ও ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন। রাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।