নিজ বাড়ি ছাড়ছে ডিএনডিবাসী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৩, ২০২১, ০৫:৪৪ পিএম

নিজ বাড়ি ছাড়ছে ডিএনডিবাসী

রাস্তায় কোমড়পানি। কারও কারও ঘরে হাটুঁটুপানি। ইতালির পর্যটন নগরী ভেনিস কিংবা দেশের কোন হাওড় অঞ্চল নয়। বরং রাজধানীর মধ্যে এমন জনদূর্ভোগ নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। ইট দিয়ে উচু করে আসবাবপত্র রাখলে শেষ পর্যন্ত অনেকেই অন্য নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাচ্ছে ডিএনডি বাঁধের বসবাসরত মানুষ। অনেকেই শুধু বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অন্যত্র পাঠিয়ে পানির মধ্যেই বসবাস করছে।

২০ লাখ লোক পানিবন্দী

ঢাকা-নারায়নগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের আশেপাশে প্রায় ২০ লাখ লোক বসবাস করে। বাঁধের ফলে কোন বাড়তি সুযোগ না পেলেও ভোগান্তি ঠিকই পাচ্ছে এলাকাবাসীরা। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল, পাইনাদী নতুন মহল্লা, ধনুহাজী রোড, পাগলাবাড়ি, মিজমিজি, বাতানপাড়া, কদমতলী, কান্দাপাড়া, সাহেবপাড়া, সানারপাড়, নিমাইকাশারী, পাঠানটুলি, গোদনাইল, ধনকুন্ডা, জালকুড়ি, তালতলা, আদর্শনগর, বাঘমারা, মৌচাক, ঢাকার ডেমরা, শনিরআখড়া, কুতুবখালি, ফতুল্লার ভুইগড়, দেলপাড়া, লালপুর, পৌষাপুকুর, সস্তাপুর, লালখাঁ, ওয়াপদারপুল, উত্তর মাসদাইর, তুষারধারা, লামাপাড়া, রামারবাগ, নয়ামাটি, কুতুবপুর, পাগলা চীতাশাল এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে কৃত্রিম বন্যা।

হতবাক প্রতিনিধি দল

জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটির সদস্যসচিব সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা। প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে গেছে ফতুল্লার লালপুর পৌষার পুকুরপাড় এলাকায়। সেখানে জলাবদ্ধতার দৃশ্য দেখে হতবাক কমিটির প্রত্যেকেই। জলাবদ্ধতা দূর করার উপায় নিয়ে চিন্তিত প্রতিনিধিদলও।

ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফুর রহমান স্বপন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির সবাই পরিদর্শনে এসেছেন। কোন দিক দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা যায়, এটা নিয়ে একটি ম্যাপ তৈরি করতে বলেছে।

বিদ্যুতের সমস্যায় পানি সেচ হচ্ছে না

মেগা প্রকল্পের আওতায় ৭টি পাম্প ক্রয় করা হয়েছিল সেগুলো স্বয়ংক্রিয় হলেও পানিবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে গত বছরের ১৯ জুন ম্যানুয়ালি জেনারেটরের মাধ্যমে চালু করা হয় এবং এক সপ্তাহের মধ্যেই ডিএনডির পানিবন্দি অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটেছিল। চলতি বছর সেই শক্তিশালী পাম্প দুটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরনো একটি ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে বিদ্যুতের সংযোগ চলমান রয়েছে।

পুরনো ট্রান্সফরমারের পাশাপাশি একটি ট্রান্সফরমার ভাড়া আনা হয়। পুরোপুরিভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে ৭টির মধ্যে কমপক্ষে ৫টি পাম্প এখনই হয়। কিন্তু সংযোগ না থাকায় ২ টি পাম্প দিয়েই সেচ করা লাগছে। ডিপিডিসি কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ না নেয়া পর্যন্ত সেই সুযোগ দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ফলে পাম্পগুলো পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না।

Link copied!