ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২, ০১:৫৭ পিএম
দেশের ইসিহাসে আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহে (পিলখানা ট্র্যাজেডি) সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের মামলার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। এদিকে ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও সকল আইনি কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় বিচার দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার সকালে বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শাহাদাত বরণকারী সেনাকর্মকর্তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তারা সরকারের কাছে এ দাবি জানান।
আর কত অপেক্ষা জানতে চায় স্বজনরা
শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর মো. মোবিনুল ইসলাম সরকারের ছোটভাই আল মামুন শাহরিয়ার সরকার বলেন, এতো বড় একটা ইস্যু, চাঞ্চল্যকর একটা ইস্যু তেরো বছর হয়ে গেছে আর কতদিন আমরা অপেক্ষা করবো এটার বিচারের জন্য? এই বিচার যেনো দ্রুত সম্পন্ন করে রায় যেনো কার্যকর হয়। সরকারের কাছে এটা আমাদের আবেদন। শহীদ মেজর মোস্তফা আসাদুজ্জামানের ভায়রা আসলাম শেরনিয়াবাত বলেন, আমরা মামলা-মোকদ্দমার বিষয় বুঝি না। আমরা মনে করি দ্রুত এই মামলার কাজ শেষ হয়ে রায় কার্যকর হয়ে যাক। কোনোভাবেই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে তারা যেনো ছাড়া না পায়।
শহীদ কর্নেল কুদরৎ আলীর ছেলে এডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে বলেছিলাম একটা জুডিশিয়াল এনকুয়ারি কমিশন গঠন করা হয়। নিরপেক্ষ ব্যক্তির অধিনে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের রিটায়ার্ড জাস্টিস দিয়ে কমিশন গঠন করা হবে। যেই কমিশন তদন্ত করবে এবং আগের যে তদন্তগুলো হয়েছে যা এখনো আউট হয় নি তা দেখবেন। দেখে তারা পেছনের ষড়যন্ত্রকারিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করবেন। এটাই আসলে মূল চেষ্টা ছিলো।
এদিকে শহীদদের স্মরণে সকালে বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী সেনাবাহিনীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানান শহীদের প্রতি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সিনিয়র সচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) আখতার হোসেন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম শ্রদ্ধা জানান।
এরপর একে একে শহীদ পরিবারের সদস্যগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং র্যাবের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় কর্মরত সামরিক সদস্যগণ স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়াও এদিন সকল সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব স্তরের সেনাসদস্যগণের উপস্থিতিতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।