মহানবীর (সা.) আদর্শতে রয়েছে কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৯, ২০২২, ০১:১৫ এএম

মহানবীর (সা.) আদর্শতে রয়েছে কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি: প্রধানমন্ত্রী

হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণ করলে মুসলমান হিসেবে অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি পাওয়া যায় বলে সবাইকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে শনিবার (৮ অক্টোবর) দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম এবং ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বিশ্ববাসী বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। এ দিন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন শান্তি, মুক্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য রাহমাতুল্লিল আ’লামীন তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে। নবী করিম (সা.)-কে বিশ্ববাসীর রহমত হিসেবে আখ্যায়িত করে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহীদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানা দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) এর অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। তার অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষদের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মহানবী (সা.)-এর শান্তিপূর্ণ ‘মক্কা বিজয়’ মানব ইতিহাসের এক চমকপ্রদ অধ্যায়। কার্যত তিনি বিনা যুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে ও বিনা ধ্বংসে মক্কা জয় করেন। শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.)-কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি অতুলনীয় ক্ষমা প্রদর্শন করে এবং তাদের সঙ্গে উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্বের দ্বারা মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ।

করোনা ভাইরাসের মহামারিসহ আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয়নবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, তাঁর সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। তাই ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর এই দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের মহানবী (সা.)- এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন।

Link copied!