“নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ অবশ্যই দরকার। কিন্তু আমাদের নেতারা জেলে আছেন। তারা জেলে থাকলে সংলাপে অংশ নেবেন কী করে? নির্বাচনে কীভাবে অংশ নেবেন? মামুনুল হকসহ সব আলেমের মুক্তির জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।”
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সংলাপে এ কথা বলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
সে সময় তিনি আরো বলেন, “মাদের সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ অনেক নেতা দ্বীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তাই দ্রুত তাদের মুক্তির জন্য আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।”
সংলাপে খেলাফত মজলিস লিখিত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আরো ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবি গুলো হলো-
১. নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কমিশনকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
২. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দিন থেকে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষমতা ইসির হাতে রাখা এবং নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচনের ৭ দিন আগে থেকে নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা পর পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা।
৩. নির্বাচনে যেভাবে অর্থের প্রভাব খাটিয়ে ভোটারদের বিপথগামী ও চরিত্র নষ্ট করা হয়ে থাকে, তাতে কোনও সৎ ও যোগ্য লোকের নির্বাচন করা খুবই কঠিন। আর এ অপতৎপরতা বন্ধ করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। অতীতে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় উল্লেখযোগ্য কোনও সফলতা অর্জিত হয়নি। নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব চলছেই। এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব হলো— নির্বাচন কমিশনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে সব প্রার্থীর পক্ষ থেকে সার্বিক
প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা। একই পোস্টারে সব প্রার্থীর পরিচয় ও প্রতীক এবং একই মঞ্চে সব প্রার্থীর বক্তৃতার ব্যবস্থা করা। জামানতের সঙ্গে এসব খরচের টাকা প্রার্থী বা দল থেকে নেওয়া যেতে পারে।
৪. নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।
৫. আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য যে কোনও প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৬. ধর্ম ও দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব-বিরোধী কোনও দলকে নিবন্ধন না দেওয়া।
৭. রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিংবা বিরোধপূর্ণ কোনও আইন ও শর্ত আরোপ না করা।
৮. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পূর্বে সংসদ ভেঙে দেওয়া।
৯. নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা নেওয়ার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১০. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারকৃত সব কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়া। নতুন কোনও রাজনৈতিক মামলা না দেওয়া। কোনও প্রার্থী ও তার কর্মীদের অযথা হয়রানি না করা।
১১. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে করা।
১২. অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
১৩.নিরপেক্ষভাবে ভোটের সংবাদ প্রচারে বা সরাসরি সম্প্রচারে মিডিয়ার ওপর কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি না করা।
১৪. প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা (সিল মারার স্থান ব্যতীত)।
১৫. প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।