ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২, ০৫:৩৬ পিএম
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের মারা যাওয়া জেব্রাগুলোর নিয়মিত খাদ্য পার্কের ঘাসের মধ্যে লেড এবং বায়ু দূষণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মারা যাওয়ার বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যেও এটি একটি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি অনুষদের প্রফেসর ও জেব্রা মৃত্যু নিয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. মো. আবু হাদী নূর আলী খান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ল্যাব পরীক্ষায় আমরা যেটা পেয়েছি সেটা হলো পার্কের ঘাসে লেডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পার্কের আশপাশের পরিবেশ ঘন শিল্পায়ন এলাকা। তা ছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশার জ্বালানি ও মবিল থেকে কালো ধোঁয়ার প্রভাব এবং একই সঙ্গে লেডের উপস্থিতিতে বিষক্রিয়া ঘটেছে। একদিকে বায়ু দূষণ অন্যদিকে প্রচণ্ড শীত, সর্বোপরি আটটি জেব্রার নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। এসব কিছু যেহেতু জেব্রার মধ্যে প্রভাব ফেলেছে সেহেতু অন্য প্রাণীদের মধ্যেও প্রভাব ফেলেছে।
তিনি বলেন, মারা যাওয়া ১১টির মধ্যে ৩টি জেব্রার নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। তবে কী রকম আঘাতে এটি হয়েছে তা নিশ্চিত নয়। সাফারি পার্কে মারা যাওয়া ১১টি জেব্রার মধ্যে ছবিতে দেখে এ বিষয়টি শনাক্ত করা গেছে।
তিনি আরও বলেন, জেব্রাগুলো ভাই-বোন, বাবা-মায়ের মধ্যে প্রজনন ঘটিয়েছে। একই পরিবারের মধ্যে প্রজনন ঘটলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়। জেব্রাগুলো ঘোড়া প্রজাতির প্রাণী। একইপাত্রে বানর খাবার খেলেও বানর থেকে জেব্রার দেহে জীবাণু ছড়ানোর কথা নয়। মানুষের নিউমোনিয়ায় আক্রমণের যে মাধ্যম সেভাবেই জেব্রার নিউমোনিয়া হতে পারে। তা ছাড়া জেব্রা ম্যানেজমেন্টেও সমস্যা থাকতে পারে। সবগুলো বিষয় চিহ্নিত করে প্রাণীর সুস্থতার জন্য পার্ক কর্তৃপক্ষকে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমন একটি পার্কে এতগুলো প্রাণী একজনমাত্র ভেটেরিনারি চিকিৎসক কীভাবে মোকাবিলা করবে? জীবাণুর সংক্রমণ হলে সবগুলো একসঙ্গে একজনের পক্ষে দেখভাল করা সম্ভব নয়।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ল্যাব পরীক্ষার প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় পার্কে মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সাথে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের মিটিং হবে। সেখানে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, ২ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পার্কে ১১টি জেব্রা, ১টি বাঘ ও ১টি সিংহী মারা যায়। এসব প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।