সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনা-বেচার সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও ফেসবুক পেজ এ্যাডমিন মো. শাহরিয়ার ইমরানসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব)।
মঙ্গলবার (১২অক্টোবর) রাজধানীর কুর্মিটোলা সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য তুলে ধরেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, সোমবার(১১ অক্টোবর) মধ্যরাত হতে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র্যাব-৫, র্যাব-২ ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট এবং রাজধানীর নর্দা হতে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা (১) মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬) এবং তার সহযোগী মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আব্দুল মান্নান (৪৫) ও মো. তাজুল ইসলাম তাজু (৩৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল এবং দেশী বিদেশী মুদ্রা জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন এবং তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবৈধ এই কিডনি ক্রয়-বিক্রয় এর সম্পূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। চক্রের ১ম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। চক্রের ২য় দলটি ১ম দলের চাহিদা মোতাবেক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব ও অভাবী মানুষদের চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন এর জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ৩য় অন্য একটি গ্রুপ প্রলোভনের শিকার ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সাথে ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করে। ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন এর উপযুক্ততা নিশ্চিত হলে, তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং এবং ভূয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ভূক্তভোগী ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে। এই চক্রের সাথে পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে ভূক্তভোগী কিডনি ডোনারকে বিদেশের এয়ারপোর্ট অথবা স্থলবন্দরে রিসিভ করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীদের নিকট হতে ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করতো। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে এবং অগ্রীম ২ লাখ টাকা প্রদান করতো। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।