নভেম্বর ৫, ২০২১, ০৩:৪৭ পিএম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর গোয়েন্দা সংস্থার প্রকাশিত ‘গোপন দলিল’ বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাস গবেষকদের জন্য অমূল্য সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাতে লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন দলিলের আন্তর্জাতিক প্রকাশনার উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম সম্পর্কে প্রকৃত এবং সম্পূর্ণ ইতিহাস এই গোপন দলিলে পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের জনগণও বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে।’
এই প্রকাশনা থেকে দেশের রাজনৈতিক নেতা ও নতুন প্রজন্ম শিক্ষা নিতে পারবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর এসব গোপন দলিল ও রেকর্ড তাদের সংগ্রহে রেখেছিল।
পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর জীবনের ৩ হাজার ৫৩ দিন কাটিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের ২৪ বছরের ইতিহাসে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি মুহূর্তের গতিবিধি ও কর্মকান্ড অনুসরণ করতো।
শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুই নয়, ‘পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা যাদের প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি করতো তাদের সবাইকে এমনকি তাঁর মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবকেও সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখতো। বিশেষ করে ১৯৬৬ সালে ছয় দফা ঘোষণার পর থেকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকতেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, এসব গোপন দলিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সংগ্রামের শুধু রেকর্ডই নয় বরং এগুলো কীভাবে একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হলো তারও ঐতিহাসিক দলিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস কীভাবে তৈরি হলো তা এইসব গোপন দলিলে প্রদর্শিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এসব নথিতে জাতির পিতার অপরিসীম দুর্ভোগ ও ত্যাগের চিত্র রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নথিগুলো একজন জাতীয় নেতা, একজন রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৈরির বিবরণ।
সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দিন থেকেই যে নীতি ও মূল্যবোধের পক্ষে থাকায় বিরোধীরা তাকে টার্গেট করেছিল। একই বাহিনী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাতে তাঁর পরিবারের বেশীরভাগ সদস্যসহ তাঁর জীবনের নির্মম পরিণতির জন্য দায়ী।
শেখ হাসিনা এই প্রকাশনার জন্য বাংলাদেশের হাক্কানি পাবলিশার্সের সাথে অংশীদারিত্বে এগিয়ে আসার জন্য টেলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে তাঁর সংগ্রামের প্রতি সুবিচার করার অঙ্গীকার নবায়ন করছি। ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড ব্রিটেন : এ সেন্টেনারি কালেকশন’ শীর্ষক একটি শিল্প প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনা।সূত্র: বাসস