প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আজও অবস্থান নিয়েছে শাহবাগে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০১:২৩ পিএম

প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আজও অবস্থান নিয়েছে শাহবাগে

ছবি: সংগৃহীত

হাইকোর্টের রায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া তৃতীয় ধাপের প্রার্থীরা এখনো শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা অবস্থান নিয়েছে। সকাল ১০টা থেকেই জাতীয় জাদুঘরের সামনে আসতে দেখা যায় তাদের। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে একবার মূল সড়কে ওঠার চেষ্টা করেন তারা। তবে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখেন। পুরো এলাকা জুড়েই মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। রাখা হয়েছে জলকামান।

সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা ব্যানার নিয়ে শাহবাগ মোড় সংলগ্ন সংযোগ সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। আর সামনে ও পাশে পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছেন। দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। এসময় তাদের ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘হয়ত মোদের যোগদান দিন, নয়ত মোদের জীবন দিন’, ‘থাকার কথা বিদ্যালয়ে, আমরা কেন রাজপথে’, ‘প্রথম ধাপ চাকরি করে, আসরা কেন রাজপথে’, ‘এক নিয়োগে দুই নীতি, মানিনা মানবো না’, ‘এক দফা এক দাবি, চাকরি নিয়ে ফিরব বাড়ি’, ‘আবু সাঈদের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘যোগদান নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘তোদের রায় তোরা নে, আমার চাকরি ফেরত দে’, ‘অবৈধ এই রায়, মানি না মানব না’, ‘অধিদপ্তর নীরব কেন, প্রশাসন জবাই চাই’-সহ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সংশ্লিষ্ট সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। ১ম ও ২য় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু ৩য় ধাপ নিয়ে প্রহসন থামছে না।

তারা আরও বলছেন, সুপারিশপ্রাপ্তরা নিজ জেলা সিভিল সার্জনে এরই মধ্যে মেডিকেল টেস্ট করে এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম জমা দিয়েছে। দেশের সব জেলার প্রায় সব উপজেলাগুলোর চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছেন। এরপরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার সীমাহীন লাঞ্চনার মধ্যে পড়েছে। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন। তারাও এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। সবাইকে আজ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা কি এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নয়। তাই এই মুহূর্তে আমাদের দাবি হচ্ছে, রায় বাতিল করে আমাদের কাজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

এর আগে, গতকালও প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়। তখন বেশ কয়েকজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দেন আদালত।

তারও আগে, গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

Link copied!