আটক শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে ঢাবি শিক্ষক আহত

জাতীয় ডেস্ক

জুলাই ৩১, ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম

আটক শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে ঢাবি শিক্ষক আহত

ছবি: সংগৃহীত

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি মার্চ ফর জাস্টিসে পুলিশের হাতে আটক হওয়া শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামী। এসময় তার সঙ্গে থাকা অপর শিক্ষক নুসরাত জাহান চৌধুরীও হেনস্তার শিকার হন। এর প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্টের মাঝামাঝি এলাকায় এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় এক পুলিশ সদস্য জোরপূর্বক শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করেন এবং ওই নারী শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।

এতে ওই শিক্ষক হাতে, হাঁটুতে এবং পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যান। পরে বিকেল সাড়ে তিনটায় এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় নিন্দা জানান। এসময় হামলায় জড়িত প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের পর দণ্ডবিধি অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি চান এবং বাংলাদেশ পুলিশকে এই আক্রমণের জন্য দাপ্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সব শিক্ষার্থী আমাদের বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি তীব্র ঘৃণা জানাচ্ছি।

এতে আরও বলা হয়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিনা কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ এক ছাত্রকে হেনস্তা করতে থাকে এবং তাতে আমাদের শিক্ষকরা বাধা দিলে পুলিশ আমাদের দুই শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। এ সময় তাদের অকথ্য গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়। এতে আমাদের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামী আহত হন। আমরা মনে করি এই ঘটনা স্বাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমূলে আঘাত করেছে। আমরা আরও মনে করি, বিভাগীয় প্রশাসন, সিন্ডিকেট কমিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না।

বাংলাদেশ পুলিশকে এই ঘটনায় দাপ্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে উল্লেখ করে বলা হয়, শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ড এবং জাতির মেরুদণ্ড নির্মাণের কারিগর। অবশ্যই বাংলাদেশ পুলিশকে এই আক্রমণের জন্য দাপ্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রথমে আমাদের সহপাঠী এবং এখন আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের ওপর এই বেআইনি এবং অমানবিক আক্রমণ কোনও ভাবেই মেনে নিতে বা কোনও সহাবস্থানে যেতে আমরা রাজি নই।

এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরিন আমিন মোনামী বলেন, “একজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ তুলে নিতে চাইলে আমি বাধা দিই। বললাম তার অপরাধ কী, চেক করার থাকলে আপনি আমাদের সামনে করুন। কিন্তু তিনি কোনও কথা না শুনে বলপ্রয়োগ করলেন। আমার হাত মুচড়ে দিয়ে ছেলেটাকে নিয়ে যেতে চাইলে আবার ধরতে গেলে আমাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় আমি রাস্তায় পড়ে যাই। হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছি, তবে হাত মুচড়ে যাওয়ায় বেশি ব্যথা পেয়েছি।” 

Link copied!