ডাকসুর ভোটার নয় বিদেশী শিক্ষার্থীরা, প্রার্থীদেরও নেই নজর

গোলাম রাব্বানী

আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম

ডাকসুর ভোটার নয় বিদেশী শিক্ষার্থীরা, প্রার্থীদেরও নেই নজর

ডাকসুতে সমাধান নেই বিদেশী শিক্ষার্থীদের সমস্যার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলেও নানা জটিলতায় ডাকসুর ভোটার নয় বিদেশী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে হল ও ক্যান্টিনে তাদের পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। তবে ভোটার না বিধায় কোন সময়ই তাদের এই সমস্যা নিয়ে কোন ছাত্র প্রতিনিধি স্বোচ্চার হননি। আর এবারের ডাকসুতে বিদেশী শিক্ষার্থীরাও এই নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া খ্যাত এলাকাতেই অবস্থান বিদেশী শিক্ষার্থীদের পি জে হার্টস আন্তর্জাতিক হল। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। তবে এই নিয়ে নানা অভিযোগ করেছেন তারা।

বিদেশী শিক্ষার্থী বলে রিক্সা ভাড়া বেশি চাওয়া হয় বলে অভিযোগ প্রায় সকলেরই। জাপান থেকে আগত ইয়োশিডা ইউকিহিরো বলেন, বিদেশী বলেই রিক্সা ভাড়া আমাদের কাছে আকাশ কুসুম চাওয়া হয়। প্রথম প্রথম অনেকেই  এই বিষয়টি বুঝতে পারে না। টিএসসি থেকে হলে যেখানে ভাড়া ৩০ টাকা সেখানে ৮০ টাকা চায় তারা।

এদিকে খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, চোখের দেখায় খাবারের মান ও পরিচ্ছন্নতা খুব ভাল মনে হয়না। আর আশে পাশে সুপারমার্কেটও নেই, সেই সাথে চুলার ব্যবস্থা নেই। সব মিলিয়ে যে আলাদা রান্না করে খাব সেই সুযোগটাও কম।

ঠিক এই অভিযোগ করেন চিন থেকে আগত শিক্ষার্থী লি জি শুং। তিনি বলেন, প্রথমে শাহবাগ থেকে হলে আমি ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে এসেছি। যেখানে ভাড়া ৩০ টাকা মতো।

নিরাপত্তার জন্য পি জে হার্টস আন্তর্জাতিক হলে রাত ১২ টার মধ্যে তালা মারা থাকে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও রাতে বাহিরে খাবার খাওয়ার জন্য বের হওয়া যায় না। এমনকি ফুড অর্ডার করেও আনতে পারেন না সেই সময়ে। ঠিক এমনই অভিযোগ করেন ভারতী থেকে আগত শিক্ষার্থী রাহুল। তিনি বলেন, আমাকের দেখতে বাংলাদেশীদের মত লাগলেও রিক্সাওয়ালা আমাকেও ছাড় দেয় না। এদিকে রাত হলে আমরা বাহির থেকেও খাবার আনতে পারি না।

তবে বিদেশী শিক্ষার্থীরা যে ভোটার নয় সেই বিষয়েই অবগত নয় ডাকসু নির্বাচনের অনেক প্রার্থী। ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশী পড়তে গিয়ে অনেকেই বিদেশের ছাত্র সংসদের নেতা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে কেন এই ভিন্ন অবস্থা সেটা নিয়ে প্রশাসনের সাথে কথা বলতে হবে।

এদিকে ছাত্রদলের প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা যে এই বিষয়টি জানতাম না। তারা বিদেশী শিক্ষার্থী হলেও তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল। তবে ভোটার না হলেও তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে যাবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে পি জে হার্টস আন্তর্জাতিক হলের প্রোভোস্ট আবুল কাওসার দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, মূলত অন্যান্য হলগুলোর চেয়ে এখানের অবস্থাটা বেশ ভালো। তবে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। শিক্ষার্থী কম হওয়ায় ক্যান্টিন ও অন্যান্য বিষয়গুলোতে অনেকেই বিনিয়োগ করতে চায় না এখানে। তবে ধীরে ধীরে সেগুলো সুরাহা করা হবে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ না থাকলেও নেতৃবৃন্দ মাঝে মধ্যে সমস্যা সমাধানে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন অনেক শিক্ষার্থী।

Link copied!