আগস্ট ২৯, ২০২১, ০২:৪১ পিএম
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু প্রকোপ। প্রায় প্রতিদিনই আড়াইশো থেকে তিন শতাধিক লোক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে গবেষকরা ডেঙ্গু রোগের নতুন ধরন শনাক্ত করেছেন। ডেনভি-৩ নামে ডেঙ্গু রোগের নতুন এই ধরনটির মাধ্যমে রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি অক্রান্ত হচ্ছেন।
রবিবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) ২০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে এসব তথ্য জানিয়েছে।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে বিসিএসআইআরের আইএফআরডি অডিটোরিয়ামে ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গবেষক ড. সেলিম খান।
তথ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুন্সি বলেন, ১৯৬০ সালে পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ২০১৭ সালেদেশে প্রথম ডেঙ্গুর এই ধরন শনাক্ত হয়। এর আগে ডেনভি-১, ২-তে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। কিন্তু ডেনভি-৩ এর বিরুদ্ধে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি।
তিনি বলেন, এবার ডেঙ্গুর ডেনভি-৩ ভ্যারিয়েন্টে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এটা ডেনভি-১,২ এর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর। বিসিএসআইআরের এই সিকোয়েন্সিং ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়ক হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
লিখিত বক্তব্যে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপ যা ডেনভি-১, ডেনভি-২, ডেনভি-৩ এবং ডেনভি-৪ এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। ভাইরাসটি এডিস মশা দ্বারা বাহিত হয় এবং মশার মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালের আগে সেরোটাইপ ডেনভি-১ এবং ডেনভি-২ এর মাধ্যমে মহামারি সংঘটিত হয়, তখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাকি ২টি সেরোটাইপ শনাক্ত হয়নি। ২০১৭ সালে ডেনভি-৩ প্রথম শনাক্ত হয় এবং ২০১৮ সালে ডেনভি-৩ সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৯ সালে এটি মহামারি আকার ধারণ করে।
করোনার পরই ডেঙ্গুকে সবচেয়ে মারাত্মক রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মশকবাহিত রোগ এই ডেঙ্গু। আইইডিসিআর’র তথ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ৩৬০ কোটি মানুষ ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে বিস্তার লাভ করেছে এই রোগ। এশিয়া,আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে।