রহস্যজনক মাংকিপক্স এখন বিশ্বে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আফ্রিকা থেকে ছড়ানো মাংকিপক্স এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের রোগীদের মধ্যে শনাক্ত হয়। যদিও ৫০ বছর আগেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব আফ্রিকায় দেখা দেয়।
মাংকিপক্স রোগ কী?
মাংকিপক্স ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ানো এই রোগ বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অনেকটা জল বসন্তের মতো। মাংসিপক্স আক্রান্ত হলে প্রথমে জ্বর,মাথা ব্যাথা, হাড় ও মাংসপেশিতে ব্যথা অনুভূত হয়। পরে শরীর ও মুখমন্ডলে গুটি দেখা যায়। এই গুটির জন্য রোগী দেহে খুব চুলকানি হয়। গুটি বসন্তের মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে এসব ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়।
কীভাবে ছড়ায় মাংকিপক্স?
সংক্রমিত রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বানর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, এমনকি মাংকিপক্সে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বিছানাপত্র থেকেও এই ভাইরাস অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশ মৃদু। এর বৈশিষ্ট্য জল বসন্তের মতোই, এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. আইজ্যাক বোগস বলেন, মাংকিপক্স করোনার মত এতটা সংক্রামক নয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি অনেকটাই জলবসন্তের মত। আর জলবসন্তের টিকা বিশ্বজুড়ে অনেক দেশেই দেয়া হয়েছে। যার ফলে মাংকিপক্স থেকে অনেকটাই সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
কীভাবে মাংকিপক্সের প্রকোপ ঘটছে?
এই রোগ প্রথম ছড়িয়েছিল একটি বানর থেকে। এরপর ১৯৭০ সাল থেকে আফ্রিকার ১০টি দেশে মাংকিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। আফ্রিকার বাহিরে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগ শনাক্ত হয়। মাংকিপক্সের সবচেয়ে বড় প্রকোপ দেখা দেয় নাইজেরিয়াতে, ২০১৭ সালে। সে দেশে মাংকিপক্সের প্রথম কেস ধরা পড়ার ৪০ বছর পর। এতে ১৭২ জন আক্রান্ত হন।
মাংকিপক্সের চিকিৎসা কী?
এই ভাইরাসের কোন চিকিৎসা নেই। জলবসন্তের টিকা ৮০ শতাংশ কার্যকরী এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপক হারে ছড়িয়ে না পড়লে এই ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।