দক্ষিণ আফ্রিকার আগেই ওমিক্রন শনাক্তের দাবি নাইজেরিয়ার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ১, ২০২১, ০৮:১৬ পিএম

দক্ষিণ আফ্রিকার আগেই ওমিক্রন শনাক্তের দাবি নাইজেরিয়ার

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সীমানা ছাড়িয়ে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার সবশেষ এই নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে মধ্য প্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও আফ্রিকার আরেক দেশ নাইজেরিয়া। এনিয়ে সারাবিশ্বে ২৪ টি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

তবে নাইজেরিয়ার সরকারের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, তারাই প্রথম ওমিক্রন ধরন শনাক্ত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে বলা হলেও নাইজেরিয়া বলছে অক্টোবরে তারা প্রথমবার ওমিক্রন ধরনের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করেছে। 

বুধবার (১ ডিসেম্বর) নাইজেরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের গত অক্টোবরে নাইজেরিয়ায় আসা তিন দর্শনার্থীর নমুনায় ওমিক্রন ধরন শনাক্ত করেছে তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নাইজেরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়। তবে এই দর্শনার্থীদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি দেশটি।

নাইজেরিয়ান সরকারের এই দাবি সত্য প্রমাণিত হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর উপস্থিতি ছিল-এমনটাই মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর ওমিক্রন ধরনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২৪ টি দেশে করোনার এই নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। দেশগুলো হলো-দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ইসরায়েল, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, অস্ট্রিয়া,সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, পর্তুগাল, ব্রাজিল, জাপান, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, সৌদি আরব, স্পেন ও সুইডেন।

অন্যদিকে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও এর আশেপাশের কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্বের  অন্তত অন্তত ৭০টি দেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ আফ্রিকায় সম্প্রতি শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন ‘বি.১.১.৫২৯’ প্রজাতিকে ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে।  এই প্রজাতিকে উদ্বেগজনক বা ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। নতুন এই প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের।

প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে আরও দেখা গেছে, ওমিক্রনে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি রয়েছে। অর্থাৎ যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের সাধারণত দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবার দৃষ্টান্ত কম হলেও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ফলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ যারা ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন তারা এখন কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, সিনোভ্যাক, স্পুটনিক ভি- এসব টিকা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর হবে? এগুলোই ওমিক্রন নিয়ে ভয়ের কারণ। বলা দরকার যে, ভাইরাস সবসময়ই পরিবর্তিত হচ্ছে, প্রতিনিয়ত মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন রূপ নিচ্ছে।

চীনের উহান শহরে প্রথম যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল, সেই ভাইরাস এখন আর নেই। ডেল্টা আর বেটা ভ্যারিয়েন্ট তাকে হটিয়ে দিয়েছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন ছিল ১০টি, আর বেটায় ৬টি। আর ওমিক্রনের ‘ইউনিক’ মিউটেশনের সংখ্যা এর অনেক বেশি- মোট ২৬টি। এতেই বোঝা যায় একে মোকাবিলা করা কত কঠিন হতে পারে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ, ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়াটার্স, এএফপি।

Link copied!