এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ইরানের দক্ষিণপূর্বের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে ৮ পাকিস্তানি গাড়ি মেকানিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা দাবি করা বালুচ ন্যাশনাল আর্মি (বিএনএ) শনিবার রাতের এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রোববার পাকিস্তানের সরকারও ইরানে তাদের দেশের ৮ নাগরিকের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ করে যাচ্ছে। সিস্তান-বেলুচিস্তানে এ বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অনেক ঘাঁটি আছে বলেও দাবি তাদের।
অন্যদিকে ইরানের অভিযোগ, তাদের সেনাবাহিনীর ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যাওয়া সশস্ত্র সুন্নি গোষ্ঠী জইশ আল-আদেল বেলুচিস্তানে ঘাঁটি গেড়েছে।
গত বছর দুই দেশই একে অপরের সীমানায় সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছিল।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান, পাশাপাশি অবস্থিত এই দুই অঞ্চলই অস্থির, খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধশালী এবং দেশদুটির অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনুন্নত।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যে ৮ গাড়ি মেকানিক নিহত হয়েছে তারা সবাই পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের। আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী মেহরেস্তান জেলার একটি ওয়ার্কশপে তাদের হত্যা করা হয়।
বিএনএ বলছে, বেলুচিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিসরে পাঞ্জাবি আধিপত্যের পাল্টায় তারা এ হামলা চালিয়েছে।
“আমাদের ভূমি ও সম্পদ বহিরাগতদের শোষণ করতে দেবো না আমরা,” অনলাইনে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে তারা।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এ হামলাকে ‘বর্বর’ অ্যাখ্যা দিয়ে ‘জড়িতদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে’ তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
“এই হামলা আমাদের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। বিদেশে আমাদের নাগরিকদের হামলার নিশানা হতে দিতে পারি না আমরা,” বলেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূত রেজা আমিরি মোগাদেম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ একটি ‘দীর্ঘস্থায়ী দুর্দশা’, যা মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা দরকার।
পাকিস্তানের হতদরিদ্র এলাকার অনেকেই ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়ি মেরামত, নির্মাণ ও কৃষি খাতে কাজ করছে, জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গত বছরের জানুয়ারিতে ইরানের দক্ষিণপূর্ব সীমান্তের সারাভানসিটিতে একই রকম এক হামলায় ৯ পাকিস্তানি শ্রমিক নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছিল।
রোববার পাকিস্তান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবারের হামলার ঘটনায় ইরানি কর্তৃপক্ষের তদন্ত ও নিহতদের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে ইরানে পাকিস্তানের দূতাবাস ও জাহিদানের কনস্যুলেট সহায়তা করছে।