দুবাইয়ের বন্যায় সংকটে পরিবেশ

আহসান মুন্না

এপ্রিল ২১, ২০২৪, ০৮:৪৯ পিএম

দুবাইয়ের বন্যায় সংকটে পরিবেশ

বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে দুবাই শহর। জলে ভাসতে দেখা গেছে দুবাই বিমান বন্দরে থাকা সারি সারি বিমান। তলিয়ে গেছে শহরটির রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি।

এই ভারী বর্ষণ ভেঙেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গত ৭৫ বছরের বৃষ্টির সর্বোচ্চ রেকর্ড। দেশটিতে অন্তত তিনজন মৃত্যুর ক্ষতির খবর এসেছে গণমাধ্যমে, পাশের দেশ ওমানে এই সংখ্যা ঠেঁকেছে বিশের কোটায়।

জলমগ্নতার কবলে কেবল বৃহস্পতিবারেই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি ডলার, দেখা গেছে দ্য সানের প্রতিবেদনে।

দেশটিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল কলেজ ও অফিস আদালত। জলামগ্ন শপিং সেন্টারগুলোতে যেন জলে থৈ থৈ করছে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে মরুভূমির শহরটির নকশায় এমন জলাবদ্ধতার কথা বিবেচনাই করেননি এর নকশাকাররা। অন্তত গত ৭৫ বছরে মরুর শহর দুবাইয়ের আবহাওয়ার চিত্রের দিকে লক্ষ্য করলে সেটাকেই স্বাভাবিক মনে হবে।

যে দেশে শুষ্ক আবহাওয়া থেকে রক্ষা পেতে বিমানযোগে মেঘের মধ্য রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো হয় সেই দেশে এমন প্রবল বর্ষণ ও দুর্বিষহ জলমগ্নতায় একটি বিষয় নিশ্চতভাবে প্রমাণ করে- জলবায়ু বিপর্যয়।

তারাপদ রায়ের মতো করে বললে হয়তো বলতে হবে- ‘আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে।’

অন্যদিকে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে নিশ্চিত করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ধরনের ক্লাউড সিডিং কার্যক্রম চালানো হয়নি।

সম্প্রতি জার্মান সরকারের গবেষণা সংস্থা পোস্টড্যাম ইন্সটিটিট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ জানিয়েছে ২০৫০ সাল নাগাদ জলবায়ু বিপর্যয়ে বৈশ্বিক বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। সেই সঙ্গে গবেষক দলটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, হিসাবটা আরও বাড়তে পারে।

তাহলে কি দুবাই-য়ের আচমকা বন্যা কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ার ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির সজাগ হয়ে যাওয়া সেই সংকটের পূর্বাভাস?

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানব-সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ে কারণে বেড়ে যাওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতায় দুবাইয়ের বন্যার মতো আরও অস্বাভাবিক ও চরম জলবায়ু পরিস্থিতির তৈরি হবে।

‘সব দেখে এটাই মনে হচ্ছে যে, ঝড়টি জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা ব্যাপক প্রভাবিত হয়েছে’, বলছেন ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের জালবায়ু বিজ্ঞানী কলিন কোলজা।

বিজ্ঞানীর সতর্ক করে বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রা ও আদ্রতা আরও বেড়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ আরও বিভিন্ন অঞ্চলে অঞ্চলে তীব্র বন্যা পরিস্থিতির তৈরি করবে।

উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটা থেকেই যায়, সেটি হলো আমরা ঠিকমতো সচেতন হচ্ছি তো?

Link copied!