গাজায় ইসরায়েলি হানায় নিহতদের পাঁচশই শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অক্টোবর ১৩, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম

গাজায় ইসরায়েলি হানায় নিহতদের পাঁচশই শিশু

ছবি: রয়টার্স

গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায় হামাস। মাত্র ২০ মিনিটে ইসরাইলের দিকে ৫ হাজার রকেট ছোড়ে তারা। একই সঙ্গে স্থল, জল ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। এর পাল্টা হামলায় গাজায় পনের শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে পাঁচশই শিশু। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার টন ওজনের প্রায় ৬ হাজার বোমা ফেলার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতির মাধ্যমে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী জানায়, ‘গত শনিবার থেকে গাজার ৩ হাজার ৬০০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যতদিন প্রয়োজন হবে আমরা নিরলসভাবে প্রবল হামলা চালিয়ে যাব।’

প্রায় ২৩ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত গাজায় ইসরায়েলের অবিরত বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৫৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। নিহতদের মধ্যে ৫০০ শিশু এবং ২৭৬ জন নারী রয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ৬ হাজার ৬১২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক।

বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ৩০ মরদেহ রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন গাজার শিফা হাসপাতালে এত মরদেহ আসছে যে, জায়গার অভাবে বাধ্য হয়েই হাসপাতালের করিডরে, গ্যারেজে এমনকি হাসপাতালের বাইরে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখতে হচ্ছে। অন্যান্য হাসপাতালগুলোর একই অবস্থা।

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি) জানায়, গাজার হাসপাতালগুলো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় মর্গে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে গত বুধবার জ্বালানি শেষ হয়ে যায়। চাহিদা মেটাতে ব্যবহৃত জেনারেটরগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

গাজা সম্পূর্ণ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং জ্বালানির প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। এর আগে ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গাজায় কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা ঢুকতে দেওয়া হবে না। কোনো বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করা হবে না, কোনো পানির হাইড্র্যান্ট খোলা হবে না এবং কোনো জ্বালানির ট্রাক প্রবেশ করবে না।’

বিবিসির খবরে বলা হয়, গাজায় মানবিক করিডরগুলো বন্ধ থাকার কারণে হাসপাতালগুলোতে অভূতপূর্ব সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গাজায় সাহায্য পাঠানোর জন্য করিডরগুলো সুরক্ষিত রেখেছিল আইসিআরসি ও জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েলের বিরামহীন বোমা হামলায় গাজায় ৩ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সাড়ে ছয় লাখ মানুষ পানি, জ্বালানি ও ওষুধের চরম সংকটে রয়েছেন। 

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জাতিসংঘের কাছে দাবি জানিয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেন গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ১১ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে সরে যায়। এর পাল্টা বিবৃতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র জানান, ২৪ ঘণ্টায় এত বড় জনগোষ্ঠীর স্থানান্তর ‘অসম্ভব’।

Link copied!