চলছে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

ইমরান খানের পর কি নওয়াজ শরীফই হচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী!

সানজিদা হোসেন

ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪, ০৯:২৩ এএম

ইমরান খানের পর কি নওয়াজ শরীফই হচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী!

ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। ছবি: এপি

আজ ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে রয়েছে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত এই দেশটি।  

কে হতে যাচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী? বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও জরিপে দেশটিতে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী নিয়ে হচ্ছে বিভিন্ন জরিপ ও ঘটনা বিশ্লেষণ।

সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ফের ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা চলছে। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে দেশটির নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। জাতীয় নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হবে কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন অনেকের। 

যুক্তরাজ্যে নির্বাসন থেকে ফিরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নওয়াজ শরীফ। শেষবার যখন নওয়াজ শরীফ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন। এর আগে তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো হয়। এতকিছুর পরেও গ্যালাপের জরিপ ও ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে আসে যে আবারও প্রধানমন্ত্রিত্ব পেতে যাচ্ছেন নওয়াজ শরীফ। পাকিস্তানের সর্বাত্মক ক্ষমতার অধিকারী সামরিক বাহিনীর পছন্দের প্রার্থী এখন নেওয়াজ।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, সংসদীয় আসনের নতুন সীমানা নির্ধারনের কারণে নওয়াজ শরিফের বিরোধীরা নির্বাচনী লোকসানে পড়ে যেতে পারেন। এটিকে নির্বাচনের আগে পরোক্ষ জালিয়াতিও বলা যায়।

বর্তমানে নওয়াজ শরীফের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেলে রয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরেই তার বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় হলো।  বিপুল জনপ্রিয় ইমরান খানকে আটকে দিতে নির্বাচন এমবি কমিশন নানা কৌশল নিচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরীফকে যখন হটানো হয়, এরপর ২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনে ভালোভাবেই ফিরে আসেন নওয়াজ শরীফ। তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় বসেন। 

তবে ২০১৭ সালের জুলাইতে দুর্নীতির দায়ে সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণা করলে, এর কয়েকদিন পরেই পদত্যাগ করেন তিনি। 

২০১৮ সালের জুলাইতে দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও দুইমাসের মধ্যে দেশটির আদালত এই সাজা বাতিল করে এবং চূড়ান্ত সাজা স্থগিত রাখে। বলা হচ্ছে, প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী তাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নওয়াজ শরীফের দুর্নীতির দায়ে জেল হলে তাকে সাত বছরের সাজা দেওয়া হয়। এরপর যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার কথা বলে জামিনের জন্য লড়েন নওয়াজ শরীফ।

২০১৯ সালেই তিনি জামিন পেয়ে লন্ডনে চলে যান। সেখানেই তিনি গত চার বছর অবস্থান করার পর ২০২৩ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানে ফিরেন।

এতকিছুর পরেও গত ৩৫ বছর ধরে নওয়াজ শরীফ পাকিস্তানের রাজনীতে শীর্ষ পর্যায়ের নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন। তবে নওয়াজ শরীফের এতকিছুর নেপথ্যে তার দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের উত্থান-পতন প্রধান কারণ হিসেবে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। দেশটির সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নওয়াজ শরীফ। এ কারণে বর্তমানে দেশে ফিরে আসায় তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

Link copied!