ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে হুট করে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর দেশজুড়ে রাজনৈতিক পালাবদল সৃষ্টি হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে কলকাতার পাইকারি মাছের বাজারে।
বুধবার (৭ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে দুই দেশের মাছ ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সীমান্তে ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উপায় তাদের কারও জানা নেই। এর পাশাপাশি এবারের পূজায় পদ্মার ইলিশ পারের বাঙালির পাতে পড়বে কিনা সেটা নিয়েও ঘোর অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
এবিপি আনন্দের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রায় ১ মাস আগে সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সেই সময় দুই দেশের সীমান্তে ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে মাছ ভর্তি ট্রাক হাওড়া মাছ বাজারে আসতে পারেনি। একইভাবে ভারত থেকেও মাছের ট্রাক সেই দেশে যেতে পারেনি। ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১০ দিন আগে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আবারও দুই দেশের মধ্যে মাছের আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৮-১০টি ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পাবদা, পারশে, ভেটকি, টেংরা, পমফ্রেট এবং অন্যান্য মাছ আমদানি হয়। আবার ভারত থেকে ১০-১২টি ট্রাকে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন বোয়াল, রুই, কাতলা, ভেটকি, কাজরি ও অন্যান্য মাছ বাংলাদেশে রপ্তানি হয়।
তারা আরও জানান, ব্যবসা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি টাকা করে ক্ষতি কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। মাছ ব্যবসায়ীরা চাইছেন, রাজনৈতিক ডামাডোল কাটিয়ে বাংলাদেশে যথাশীঘ্র একটি সরকার গঠন হোক। তবেই ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবেন তারা।
ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, “বিষয়টাকে ইস্যু করে আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি লেখার কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক গণ্ডগোলের কারণে কী হবে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। নতুন সরকার এলে তাদের কাছে একই আবেদন করা হবে। তারা ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিলে তবেই বাঙালির পাতে উঠতে পারে ইলিশ।”