বেটা
ক্যালেন্ডারে তারিখটা ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই । এই দিনটিতে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । নিউ মেক্সিকোর লস অ্যালামোসে হয় এই মারণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা।
দেখতে দেখতেই পেরিয়ে গেল পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার ৭৮ বছর। আট দশকের এই দীর্ঘ সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একে একে ২ হাজার বারেরও বেশি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক বিশেষ প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরেছে।
নিউ মেক্সিকোয় চালানো পরীক্ষাটি ট্রিনিটি পরীক্ষা নামে পরিচিত। প্লুটোনিয়াম দিয়ে তৈরি সেই বোমা বিস্ফোরণের পর উৎপন্ন করেছিল ১৮ দশমিক ৬ কিলোটনেরও বেশি শক্তি। এবং সেই পরীক্ষার মধ্য দিয়েই শুরু পারমাণবিক শক্তির যুগ।
প্রথমবারের মতো বোমাটি পরীক্ষার মাত্র এক মাস পরেই যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে দুটি বোমা ফেলে। এর তেজস্ক্রিয়তায় তাৎক্ষণিকভাবে ১ লাখেরও বেশি লোক নিহত হয়। পরে এই বোমার বিকিরণসহ অন্যান্য কারণে নিহতের সংখ্যা প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি চলে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিনিটি পরীক্ষার পর থেকে এই পর্যন্ত বিশ্বে আরও ২ হাজার ৫৫ বার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালানো হয়। এর মধ্যে ৫০৭ বার পরীক্ষা চালানো হয়েছে মহাশূন্যে। যার ফলে বায়ুমণ্ডলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি বন্ধ করতে ১৯৬৩ সালে লিমিটেড টেস্ট ব্যান ট্রিটি স্বাক্ষরিত হয়।
তবে মোট ২০৫৫ বার পারমাণবিক পরীক্ষার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ১ হাজার ৩০ বার চালিয়েছে। যা বিশ্বের মোট পারমাণবিক পরীক্ষার অর্ধেকেরও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। দেশটি ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মোট ৭১৫ বার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে। দেশটি প্রথম পরীক্ষা চালায় ১৯৪৯ সালের ২৯ আগস্ট কাজাখস্তানের সেমিপালাতিনস্ক টেস্টিং গ্রাউন্ডে। সেই পরীক্ষার কোড নেম ছিল আরডিএস-১।
পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটি ২১০ বার পরীক্ষা চালিয়েছে। আর কোনো দেশের পারমাণবিক পরীক্ষাই এক শ’র ঘর পার হয়নি। চীন, যুক্তরাজ্য উভয় দেশই ৪৫ বার করে পরীক্ষা চালিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তান ২ বার করে পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে এই দুই দেশের চেয়েও বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি মোট ৬ বার পরীক্ষা চালিয়েছে। দেশটি সর্বশেষ পরীক্ষা চালিয়েছে ২০১৭ সালে।
