ভিসা-গ্রিনকার্ড দেয়ার আগে সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট যাচাই করবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১১, ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম

ভিসা-গ্রিনকার্ড দেয়ার আগে সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট যাচাই করবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ

ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো লেখা বা কন্টেন্ট পোস্ট করার কারণে মার্কিন ভিসা বা গ্রিনকার্ডের আবেদন বাতিল হতে পারে। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এটাকে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান ইসরাইলবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি মনোভাব দমনে ক্ষমতাসীন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

গত প্রায় দেড় বছর ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী ইসরাইলবিরোধী মনোভাব ও ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতি বাড়ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ তারই দৃষ্টান্ত। খবর এএফপি ও ডিডাব্লিউ।  

তবে ইসরাইলবিরোধী এসব বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ অভিহিত করে বিক্ষোভকারীদের দমনপীড়নে নেমেছে পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের ভিসা বাতিল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নির্বাহী আদেশ জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই নির্বাহী আদেশের আওতায় এরই মধ্যে গাজায় বর্বরতায় লিপ্ত ইসরাইলের নিন্দা ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কারণে কয়েকশ’ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। গ্রিনকার্ড কেড়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়াও অবলম্বন করা হয়েছে।  

এবার আরও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার (৯ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস) এক বিবৃতিতে জানায়, এখন থেকে তারা ভিসা ও গ্রিনকার্ডের আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টস যাচাই করবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি ‘ইহুদিবিদ্বেষী লেখা বা কনটেন্ট পাওয়া যায়, তাহলে ভিসা বা গ্রিনকার্ডের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে।

এছাড়া ফিলিস্তিনভিত্তিক হামাস, প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীসহ যেসব গোষ্ঠী ও সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; সেসব গোষ্ঠীকে সমর্থন, প্রচার-প্রচারণা ও অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ যেসব আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে প্রোফাইলে পাওয়া যাবে, তাদের আবেদনও বাতিল করা হবে।

আপাতত শিক্ষার্থ ভিসা ও গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদনকারীদের ওপর এই সিদ্ধান্ত প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসসিআইএস। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ট্রিসিয়া ম্যাকললিন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘যারা সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জন্য কোনো জায়গা নেই। ফলে তাদেরকে এই দেশে থাকতে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধ্যকতাও আমাদের নেই।

মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, ‘কেউ যদি ভেবে থাকে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে ইহুদিবিদ্বেষ এবং সন্ত্রাসবাদকে এগিয়ে নেবে- তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের পরিষ্কার বার্তা হলো, আরেকবার ভেবে দেখুন। এমন করলে আমরা আপনাকে স্বাগত জানব না।

এর আগে একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। বলেছে, ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ জার্মান নাগরিকত্ব হারানোর কারণ হতে পারে। দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে, এমন ‘সন্ত্রাসের সমর্থক, ইহুদিবিদ্বেষী ও চরমপন্থী’ ব্যক্তিরা জার্মানির নাগরিকত্ব হারাতে পারেন। তবে এমনটা হলে তা অন্যায় হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Link copied!