এপ্রিল ৯, ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে আন্দোলনের জেরে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। গতকাল মঙ্গলবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার ২২ জনকে আটক করে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ শহরের আশপাশে এবং রঘুনাথগঞ্জ, সুতি এলাকায় বিক্ষোভকারীরা বৃহত্তর আইনটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জমায়েত হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের দাবি তুলে। ওই সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং ব্যাপক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
পরবর্তীতে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে ছিল। জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেনি। রঘুনাথগঞ্জ ও সুতি এলাকায় নিষেধাজ্ঞা আদেশ অব্যাহত থাকবে এবং আগামীকাল ১০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে। এক জায়গায় এক সঙ্গে ৫ জন বা তার বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবে না। ইন্টারনেট সেবা স্থগিত থাকবে ১১ এপ্রিল (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
পুলিশের পক্ষ থেকে জেলায় একাধিক অঞ্চলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট এলাকাতে আরও পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে, বিশেষ করে শহরের আশপাশে। শহরটি ছিল প্রতিবাদের কেন্দ্রস্থল, যেখানে আন্দোলনকারীরা বৃহত্তর ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন।
ভারতে রেল ও সেনাবাহিনীর পরই সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি রয়েছে ওয়াকফের আওতায়। নতুন ওয়াকফ আইনে সেই সম্পত্তির ওপরে সরকার এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে বলে মনে করছেন মুসলিমরা। পাশাপাশি, বিরোধীর বক্তব্য ছিল ওয়াকফ বিল সরাসরি মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপরে হস্তক্ষেপ।
লোকসভায় বিল পেশ করে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছিলেন, দেশের ওয়াকফ সম্পত্তির সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। এই সম্পত্তি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে শুধু মুসলিমদের জীবনই নয়, দেশও বদলে যাবে বলে দাবি তার ।
মুসলিমদের কল্যাণে দান করা জমিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলা হয়, যা বিক্রি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায় না। ভারতে সর্বোচ্চ ১০ লাখ একর ওয়াকফ ভূমি রয়েছে। এ ভূমি পরিচালনায় প্রতিটি রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে।